ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পল্লবীতে বাড়ি দখলের অভিযোগ, ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২২, ২০:২০

পল্লবীতে বাড়ি দখলের অভিযোগ, ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন
ছবি: নিজস্ব

রাজধানীর পল্লবী এলাকায় দলীয় পরিচয়ে চাঁদাবাজী ও একাধিক ব্যক্তির বাড়ি-প্লট এবং দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে আশিকুল ইসলাম আশিক নামের একজনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন পল্লবীর ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধ দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান তারা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আবু জাফর শিকদার, সাহেদ হোসেন মনা, জাহানারা বেগম, তারেক হোসেন বাদল, এমরান হোসেনসহ অন্যান্যরা।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী জাহানারা বেগম বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী এবং আমার স্বামী মাহমুদ আলী সরদার একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নায়েব সুবেদার (সিএমএইচ) ছিলেন। ২০০৬ সালে স্বামী মারা যান। আমাদের রতন নামের একজন ছেলে সন্তান আছে। ২০১৬ সালে আমি চিকিৎসার জন্য ভারতে যাই। ওই সময় আমার ছেলেকে পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে আশিক আমার পল্লবীর ১২/ডি-১৮/১০ নম্বরস্থ বাড়ির নিচতলার দোকান ঘরটি ৩ মাসের কথা বলে জোর করে ভাড়া নেন। এরপর আশিক এক/দেড় বছর আমাকে ৫ হাজার টাকা করে দোকান ভাড়া দেন। কিন্তু পরে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেন। অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় আমার ছেলে রতন আশিককে দোকান ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। এতে আশিক উত্তেজিত হয়ে আমার ছেলেকে গাল মন্দ করে এবং পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে বলেন, যে দোকান খালি করা তো দুরের কথা এখন থেকে ভাড়া ও পাবি না। আস্তে আস্তে পুরো বিলডিং আমি দখল করে নিবো।

ওই দিনই সন্ধ্যার পর আমার ছেলে টেনশনে ব্রেইন স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এই সুযোকে আশিক আমার দোকানে সামনে ফুট পাতের জায়গা দখল করে আর একটা রুম তৈরি করেন। বাধা দিলে আমাকে ও গালাগালি করে ও পিস্তল দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে আমার দোকান ঘরটি অফিস করার নামে কতিপয় বখাটে ছেলেদের নিয়ে দিন থেকে গভির রাত প্রর্যন্ত আড্ডাখানা গোড়ে তোলেন। আর আমার বাড়ির সামনে ফুটপাতে রুম তৈরির সময় আমার বাড়ির পশ্চিম পাশের গাড়ির গেরেজে মালামাল রাখার নামে দখল করে নেন আশিক।

ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয় ইট, বালু-সিমেন্ট ব্যবসায়ী আবু জাফর শিকদারকে প্রতি গাড়িতে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিতে বলে। না দেয়ায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। ১২/সি, ১৭ নম্বর রোডের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সারোয়ার হোসেনের স্বর্ণের দোকানটি দখল করে নেয়। বিগত ২০১৬/১৭ সালে সাহেদ হোসেন মনাকে স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে তাকে রাখার জন্য এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় তাকে কমিটির বাইরে রাখা হয়।

ভুক্তভোগী মীর আলাউদ্দিন বাপ্পীর মা সেতারা বেগমের ১২/সি, ২১/১৪ নম্বর বাড়িটি জোড় করে লিখে নেয়। তার ১২/সি, ২১/১৩ নম্বর বাড়ি জোড় করে দখল করতে প্রতারণামূলকভাবে বাপ্পীর মাকে দিয়ে বাপ্পীর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করায়। আদালত তদন্ত সাপেক্ষে বাপ্পীর পক্ষে রায় দিয়ে মামলাটি খারিজ করে দেন। স্থানীয় মুসলিমবাজারের মসজিদ ও মাদ্রাসার জমি জাল-জালিয়াতি করে দখলে নিয়ে সেখানে আশিক শপিং মার্কেট বানিয়েছে।

এদিকে গত ২০১৫ সালের মার্চ মাসে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে হলফনামায় তার বিরুদ্ধে হওয়া হত্যাসহ ৭টি মামলার কথা স্বীকার করলেও আরও ১১/১২টি মামলার তথ্য এড়িয়ে যায়। ট্যাক্সপেপার জাল-জালিয়াতি করে লাইসেন্স করা পিস্তল ও শর্টগান দেখিয়ে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও বাড়ি দখল করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য দপ্তরে প্রমাণপত্রসহ অভিযোগ দিয়েছেন।

গত ১৪ বছর আগেও আশিকের কিছুই ছিলো না জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর তিনি বাড়ি-গাড়ি ও কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এমন লোককে দল থেকে বহিষ্কার করে দলের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে সংশ্লিষ্টদের জরুরী হস্তক্ষেপের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আশিকুল ইসলাম আশিক বলেন, তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো সত্য নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এমন মিথ্যা অভিযোগ করছেন প্রতিপক্ষ।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত