ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

চাষের অনুমোদন পেলো উচ্চ ফলনশীল ‘ডায়াবেটিক ধান’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৪:৩৯

চাষের অনুমোদন পেলো উচ্চ ফলনশীল ‘ডায়াবেটিক ধান’
পরীক্ষামূলক ধানের চাষ । ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট উচ্চ ফলনশীল দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে একটি ধানের চাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। অপরটি দক্ষিণাঞ্চলসহ জোয়ার ভাটা অঞ্চলের জন্য উপযোগী। নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৫ ও ব্রি ধান ১০৬ এর অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বীজ বোর্ডের ১০৯তম সভায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত নতুন জাত দুটির অনুমোদন দেয়া হয়। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এ দুটি জাতের চাষ ও ফলন পরীক্ষা করেছে ব্রি। শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিক ফলন গ্রহণযোগ্য মনে করায় এই দুটি জাতকেই অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড।

ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ডঃ খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, ব্রি ধান ১০৫ কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআইসম্পন্ন হওয়ার কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক চাল’ বলা হচ্ছে।

তিনি জানান, অতিরিক্ত ছাটাইকৃত চাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার আমাদের দেশে মাড় ফেলে ভাত খাওয়ার কারণে এমনি পুষ্টি কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ব্রি ধান ১০৫ বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে কারণ এটিতে পুষ্টিমান যেমন আছে তেমনি জিআই অনেক কম।

সাধারণত খাদ্যে জিআই ৫৫ বা আর নীচে থাকলে এটি কম জিআই সম্পন্ন বলা হয়ে থাকে। ইন্সটিটিউটের গবেষণায় ব্রি ধান ১০৫-এ জিআই এই মাত্রার নিচে পাওয়া গেছে। অবশ্য বাংলাদেশে লো জিআই-এর ধান উদ্ভাবন এবারই প্রথম নয়। এর আগেও লো জিআই সমৃদ্ধ তিনটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।

ব্রি বলেছে, বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী ব্রি ধান ১০৫ থেকে পাওয়া চালে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামূলক কম এবং সে কারণেই একে ‘ডায়াবেটিক ধান’ বলা হচ্ছে। এ ধানটির শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো এর পাতা সবুজ ও খাড়া ডিগ পাতা আর দানা মাঝারি লম্বা ও চিকন। ধানটি পেকে যাওয়ার পরেও এর গাছ সবুজ থাকে। ধানটিতে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের শস্যমান ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, ধানটির গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭ দশমিক ৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে সাড়ে আট টন পর্যন্ত ফলন বাড়তে পারে। কিছুটা চিকন ও লম্বা জাতের এ ধানটি বীজ বপন থেকে ফসল তোলা পর্যন্ত ১৪৮ দিন সময় লাগতে পারে।

অন্যদিকে, ব্রি উদ্ভাবিত আরেকটি ধান হলো ব্রি ধান ১০৬। যেটি জোয়ার ভাটা অঞ্চলের জন্য উপযোগী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এটি বরিশাল, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকার জন্য উপযোগী।

ডঃ খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের জন্য আগেও একটি জাত ছিলো কিন্তু সেটি হেলে পড়তো। তবে নতুন এ জাতটি হেলে পড়বে না এবং এর ফলনও বেশি হবে। হেক্টর প্রতি ধান পাওয়া যাবে সাড়ে পাঁচ টন। এছাড়া এ ধান গাছটির গোড়া ও ধানের দানার মাথায় বেগুনি রঙ থাকে এবং এর গড় জীবনকাল ১১৭দিন।

উল্লেখ্য, উচ্চ ফলনশীল আধুনিক ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১০২টি আধুনিক ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে ৯৫ টি ইনব্রিড ও ৭টি হাইব্রিড।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত