ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

একজন অভিনেত্রীর জন্য ‘কঙ্কণ দাসী’ চরিত্রটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং: মিথিলা

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৭:৪৭  
আপডেট :
 ০৩ মার্চ ২০২২, ১৮:০২

একজন অভিনেত্রীর জন্য ‘কঙ্কণ দাসী’ চরিত্রটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং: মিথিলা
‘কঙ্কণ দাসী’ হয়ে আসছেন নন্দিত অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

ষোড়শ শতাব্দীর “মৈমনসিংহ গীতিকা”র গল্পে নির্মিত হচ্ছে সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘কাজল রেখা’। ‘মনপুরা’-খ্যাত নন্দিত নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের পরিচালনায় এর কেন্দ্রীয় দুই চরিত্রের একটি ‘কঙ্কণ দাসী’ হয়ে আসছেন নন্দিত অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। সম্প্রতি ছবিটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এটি হতে যাচ্ছে মিথিলার ষষ্ঠ সিনেমা।

সিনেমাটিতে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জার্নালকে মিথিলা বলেন, ‘এই সিনেমাটি নিয়ে গত ১ যুগ ধরে সেলিম ভাই স্বপ্ন দেখে আসছেন। এটি তার স্বপ্নের প্রজেক্ট। ছবিটি নিয়ে অনেক আগেই আমার সাথে কথা হয়েছে, ২ বছর আগেই আমি এর গল্প শুনেছি। গল্প শোনার সাথে সাথেই আমি কাজটি করার জন্য সম্মতি জানিয়েছি যে, ছবিটি আমি করতে চাই। এরপর সেলিম ভাই সবকিছু গোছাতে বেশ সময় নিলেন। এরপর এখন তো ঘোষণা চলেই আসলো।’

‘কাজল রেখা’ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কাজল রেখা’ হচ্ছে প্রাচীন রূপকথার গল্প, “মৈমনসিংহ গীতিকা”র পালা গানের গল্প যা আগে শুধু যাত্রাবালায় হতো। এরকম গল্প নিয়ে সিনেমা হয়নি আগে, এবারই প্রথম হতে যাচ্ছে। এটা যে সিনেমা হতে পারে সেটা অনেকেই সাহস করতে পারেনি কিন্তু সেলিম ভাই যে সে সাহস করতে পেরেছে সেটা নিয়েই আমরা বেশ শঙ্কিত ছিলাম।

ছবিটির দুটি কেন্দ্রীয় চরিত্রই নারী, একটি নায়িকা অন্যটি খল-নায়িকা। খল-নায়িকা চরিত্রটি-ই কেন বেছে নিলেন আপনি, এমন প্রশ্নে মিথিলার উত্তর, ‘আগেকার সময়ের গল্পগুলোতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে কিন্তু নারী চরিত্রগুলোই থাকতো, যেমন- সুয়োরানী, দুয়োরানী উল্লেখযোগ্য। এই সিনেমার গল্পেও সেইম; একটা মেইন প্রোটাগনিস্ট যেটি ‘কাজল রেখা’, আরেকটা মেইন এন্টাগনিস্ট ‘কঙ্কণ দাসী’। দুটোই কেন্দ্রীয় চরিত্র, তবুও স্ক্রিপ্ট পড়ার পর আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম যে কোন চরিত্রটি করবো!

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো যে, চরিত্র বাছায়ের জন্য আমাকে অপশন দেওয়া হয়েছিলো যার কারণে আমি বাছাই করতে পেরেছি। দুটো চরিত্রের মধ্যে আমি এন্টাগনিস্ট অর্থাৎ নেগেটিভ চরিত্রটি বেছে নেই। কারণ, এই চরিত্রটি-ই আমার বেশি ভালো এবং খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। একজন অভিনেত্রীর জন্য ‘কঙ্কণ দাসী’ চরিত্রটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। অন্যদিকে, কাজল রেখা খুবই নম্র, ভদ্র এবং নিষ্পেষিত; পিতৃতান্ত্রিক সমাজ দ্বারা অবহেলিত, যার ছোটবেলাতেই বিয়ে হয়ে যায়। সেদিক থেকে ‘কঙ্কণ দাসী’র চরিত্রটি বেশ শক্তিশালী। ‘কঙ্কণ দাসী’ খুবই বুদ্ধিমতী, বিচক্ষণ এবং উচ্চাকাংখী। তার নাম কিন্তু আসলে ‘কঙ্কণ দাসী’ নয়, তাকে কঙ্কণের বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে তাকে এ নামে ডাকা হয়। এমন চরিত্রটাকে আমাদের সমাজে অবশ্য নেগেটিভ চোখেই দেখে।

আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি যেহেতু কাজ-ই কম করি তাই ভাবলাম করলে ইন্টারেস্টিং কিছুই করবো। সেই চিন্তা থেকেই এই চরিত্রটি বেছে নেওয়া।

৪০০ বছর আগের গল্পে কাজ করাটা কতটুকু কঠিন বলে মনে হয়, এমন প্রশ্নে অভিনেত্রীর সহজাত উত্তর, ওই সময়টাকে বর্তমানে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা খুবই কঠিন বিষয়। এখনকার সময়ের কোনকিছুই তো ব্যবহার করা যাবে না তাই সেসময়ের একজন স্থপতি রয়েছেন আমাদের টিমের সঙ্গে। তিনি সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন, সেলিম ভাই সেগুলো দেখছেন। প্রাচীন বাংলা নিয়ে তার অনেক গবেষণা রয়েছে। আমাদের পোশাক কেমন হবে, গয়না কেমন হবে; সবকিছুরই প্রস্ততি চলছে। তারপর প্রাচীন নৃগোষ্ঠীর হাজং,গারো-এরকম অনেকেই টিমে কাজ করতেছেন।

সে সময়ের ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে লোকেশন, কস্টিউম এবং আনুসঙ্গিক সব বিষয়ই সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। যার জন্য ছবির লোকেশনে আগেকার সময়ের আলোকে সেট নির্মাণ করা হচ্ছে। বজরা, নৌকাগুলো কেমন ছিল সেসময়ে, ঠিক সেভাবেই প্রস্ততি চলছে এখন। মোটকথা, যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই করা হচ্ছে। সেলিম ভাই প্রচুর গবেষণা করছে আর আমাদেরকে প্রতিনিয়ত সেগুলোর আপডেট জানাচ্ছে। আশা করছি আমরা সুন্দরভাবেই কাজটি করতে পারবো।

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই ছবির শুটিং শুরু হবে। তবে মিথিলা অংশ নেবেন এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। গেল সপ্তাহেই তিনি কলকাতা থেকে দেশে ফিরেছেন এবং আগামী রোববার আবার সেখানে ফিরে যাবেন। কলকাতায় এরইমধ্যে শেষ করলেন ওয়েব সিরিজ ‘মন্টু পাইলট ২’ এর কাজ।

এছাড়াও মিথিলা আগামী শনিবার (৫ মার্চ) অংশ নেবেন অমর একুশে বইমেলায়। এবারের বইমেলায় উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে ‘আইরা আর মায়ের অভিযান’ সিরিজের নতুন বই ‘আফ্রিকায় সিংহের খোঁজে’। সেদিন একমাত্র মেয়ে আইরাকে নিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করবেন অভিনেত্রী।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত