ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

যেভাবে কনক হয়ে উঠলেন ছায়া দেবী

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৩২

যেভাবে কনক হয়ে উঠলেন ছায়া দেবী
অভিনেত্রী ছায়া দেবী

প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেত্রী ছায়া দেবী ৩ জুন ১৯১৪ সালে ভারতের বিহার রাজ্যের ভাগলপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছায়া দেবীর জন্ম তার পিসিমার ( সতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী) ভাগলপুরের রাজবাড়ীতে। তার পিতা হারাধন গঙ্গোপাধ্যায়। তার প্রাথমিক শিক্ষা ভাগলপুরের মোক্ষদা গার্লস স্কুলে । ভাগলপুর থেকে বাবার সঙ্গে দিল্লি গিয়ে ইন্দ্রপ্রস্থ গার্লস স্কুলে ভর্তি হন এবং সঙ্গীত চর্চা করতে থাকেন । এগারো বছর বয়সে রাঁচির অধ্যাপক ভূদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ হয়। কিন্তু এ বিবাহ কার্যকর হয় না । দশম শ্রেণীর ছাত্রী তিনি বাবার সঙ্গে কলকাতায় এসে কৃষ্ণচন্দ্র দে ও পণ্ডিত দামোদর মিশ্রর কাছে সংগীত শিখতে থাকেন । সেই সঙ্গে বেলা অর্ণবের কাছে নাচের তালিম নিতে থাকেন। নাটক-পাগল দুই পিসতুতো দাদা শ্রীশচন্দ্র ও শৈলেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি অভিনয় জগতে আসেন ।

১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে কনক নামের কিশোরী ছায়া দেবী নাম নিয়ে 'পথের শেষে' ছবিতে অন্যতম নায়িকার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দেই তিনি দেবকী বসুর 'সোনার সংসার'ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই ছবিটি হিট হওয়ায় তিনি সোনার মেডেল পেয়েছিলেন । ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি 'রাঙা বৌ', ছিন্নহার','প্রভাসমিলন','হাল বাঙলা', বিদ্যাপতি (হিন্দি ও বাংলা),'জীবন মরণ', 'রিক্তা'প্রভৃতি।

অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি ছবিতে তিনি গানও গেয়েছেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'অভয়ের বিয়ে' ছবিতে তিনি ৪/৫ খানা গান গেয়েছেন । প্রফুল্ল রায়ের আমন্ত্রণে তিনি মুম্বই যান। সেখানে'মেরাগাঁও ' ছবিতে গানে ও অভিনয়ে বিশেষ পারদর্শিতা দেখান। ছায়া দেবী প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা, হিন্দী, তামিল ও তেলুগু ভাষায় শতাধিক ছায়াছবিতে প্রধানত পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে 'বিদ্যাপতি' ছায়াছবির জন্য উনি প্রশংসিত হন ও ক্রমে প্রচুর উল্ল্যেখযোগ্য ছবিতে অভিনয় করেন, যেমন বাংলায় পরিচালক তপন সিংহর নির্জন সৈকতে (১৯৬৩), হাটে বাজারে (১৯৬৭) এবং আপনজন (১৯৬৮), সপ্তপদী (১৯৬১), মানিক (১৯৬১), উত্তর ফাল্গুনী (১৯৬৩), (১৯৬৭) বা হিন্দীতে অমিতাভ বচ্চনের সাথে আলাপ (১৯৭৭)।[২] বাংলা,হিন্দি ও তামিল তিন ভাষাতেই 'রত্নদীপ' ছবিতে তার অভিনয় স্মরণীয় । প্রায় দু-শোর বেশি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন । ছায়াছবিতে কাজ করার পাশাপাশি বেতার কেন্দ্রে নিয়মিত খেয়াল, ঠুংরি পরিবেশন করেছেন । তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি-

চৌরঙ্গী, কুঁয়াশা, রাতভোর, সাহেব বিবি গোলাম, ত্রিযামা, মায়াবাজার,গলি থেকে রাজপথ, মাণিক, অটলজলের আহ্বান, দেয়ানেয়া, সপ্তপদী, নির্জন সৈকতে, সাত পাকে বাঁধা, মুখার্জি পরিবার,অন্তরাল, আরোহী, কাঁচ কাটা হীরে, সূর্যতপা, থানা থেকে আসছি, মণিহার, গল্প হলেও সত্যি, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, হাটেবাজারে, আপনজন, (রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত), বাঘিনী, কমললতা, পিতাপুত্র, প্রতিদান, কলঙ্কিত নায়ক, রাজকুমারী, মুক্তিস্নান, সমান্তরাল, কুহেলী, হার মানা হার, শেষ পর্ব পদিপিসির বর্মি বাক্স, দেবীচৌধুরাণী,হারমোনিয়াম, আরোগ্য নিকেতন, রাজা রামমোহন, বাবা তারকনাথ, আলাপ, ধনরাজ তামাং, অরুণ বরণ কিরণমালা, সূর্যসাক্ষী, রঙবেরঙ, প্রায়শ্চিত্ত, রাশিফল, লালগোলাপ, স্বর্ণমণির ঠিকানা, প্রতিকার, বোবা সানাই। ২০০১ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত