ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পল্লবীকে খুন করেছেন প্রেমিক, অভিযোগ অভিনেত্রীর বাবার

  বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২২, ১৮:৩৮

পল্লবীকে খুন করেছেন প্রেমিক, অভিযোগ অভিনেত্রীর বাবার

প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রায় বছর দেড়েক ধরে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন অভিনেত্রী পল্লবী দে। পল্লবী ছাড়াও অন্য এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতেই পল্লবীকে খুন করেছেন তার প্রেমিক, সোমবার গরফা থানায় এমন অভিযোগই তুললেন অভিনেত্রীর বাবা।

সোমবার, অর্থাৎ পল্লবীর মৃত্যুর পরের দিন বিকেলেই গরফা থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন তার বাবা নীলু দে। তার সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রীর মা সঙ্গীতা দে এবং তাদের পরিবারের আইনজীবীও। তবে পুলিশের কাছে শুধু সাগ্নিকের বিরুদ্ধে নয়, সাগ্নিক-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পল্লবীকে খুন করার অভিযোগ জানিয়েছেন নীলু।

তার বাবার ভাষ্যমতে, অভিনেত্রীর লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের জন্যই পল্লবীকে খুন করা হয়েছে।

পল্লবীর বাবার অভিযোগ, পল্লবীর থেকে নিয়মিত অর্থসাহায্য নিতেন সাগ্নিক। যা বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে তাকে দিয়েছেন পল্লবী। সেই সব লেনদেনের তথ্যও রয়েছে পল্লবীর পরিবারের হাতে। এর পাশাপাশি অন্য এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে গিয়েছেন সাগ্নিক। যা সম্প্রতি জানতে পেরে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী।

থানায় পল্লবীর বাবার অভিযোগে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পল্লবীর মৃত্যুর জন্য শুধু সাগ্নিক নন, সাগ্নিকের ওই বান্ধবী এবং তার সঙ্গীরাও দায়ী। তারাই ‘প্ররোচনা’ দিয়েছেন পল্লবীকে। এই দাবির প্রমাণ হিসেবে পল্লবীর সহকর্মীদের বয়ানের কথাও উল্লেখ করেছেন অভিনেত্রীর বাবা।

তিনি জানিয়েছেন, যে দিন থেকে ওই সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলেন পল্লবী, তার পর থেকেই অশান্তি শুরু হয়েছিল দু’জনের মধ্যে। এমনকি, বহুবার পল্লবীকে আঘাতও করেছেন সাগ্নিক। পল্লবীর শরীরে সেই সব আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন বলে পল্লবীর বাবাকে জানিয়েছেন পল্লবীর সহকর্মীরাই।

পল্লবীর দিদি দিদি পৌলোমী গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘ওরা বিয়ে করেনি। তবে ভালোবেসে এক সঙ্গে থাকত। সম্পর্কে ঝামেলা ছিল কি না, বলতে পারব না। কিন্তু ওদের ঝগড়া-মারপিট হত। জিনিস ভাঙচুর করতে দেখেছি। তবে ওদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কখনও কিছু জিজ্ঞাসা করিনি।’’

তার দাবী, ‘‘বোনের কোনও ধারদেনা ছিল না। আর্থিক সমস্যা একেবারেই ছিল না। দিব্যি একের পর এক টেলি সিরিয়ালে কাজ পাচ্ছিল। আর কাজ না পেলে অধৈর্য হওয়ার মেয়ে নয় ও। দিব্যি ছিল বোন।’’

পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার মেয়ে পল্লবী রুপালি পর্দায় কাজ করতে পাড়ি জমান কলকাতা শহরে। সাড়া দিয়েছিলেন রুপালি পর্দার হাতছানিতে। পল্লবীর টেলিভিশনযাত্রা খুব বেশি দিনের নয়। অল্প সময়েই ছোট পর্দায় পরিচিতি পেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। কালারস বাংলার ‘রেশমঝাঁপি’ ধারাবাহিকে প্রথম নজর কাড়েন তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘আমি সিরাজের বেগম’ ধারাবাহিকে সিরাজের স্ত্রী লুৎফার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এই চরিত্রের জন্য তিনি জনপ্রিয়ও হয়ে ওঠেন।

‘কুঞ্জছায়া’ নামে একটি ধারাবাহিকেও তিনি অভিনয় করেছিলেন। বর্তমানে পল্লবী অভিনয় করছিলেন ‘মন মানে না’ ধারাবাহিকে। সেখানে তিনি নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। সেই পল্লবী রোববার হঠাৎ করেই পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। রোববার সকালে কলকাতা শহরের গড়ফার ফ্ল্যাট থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। বিছানার চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর তার প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীকে থানায় নিয়ে জেরা করা হয়।

সাগ্নিক চক্রবর্তী একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। ঘটনার পরই তাকে গড়ফা থানায় ডেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি থানাতেই ছিলেন বলে খবর পুলিশ সূত্রে। জেরায় সাগ্নিক স্বীকার করেছেন, গত শনিবার রাতে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। শনিবার সকালেও ঝগড়া হয়েছিল। এরপর কিছুক্ষণের জন্য বাইরে ধূমপান করতে গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে দেখেন দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তিনি পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পল্লবীর ময়নাতদন্ত হয় কাঁটাপুকুর পুলিশ মর্গে। সেখানকার চিকিৎসকদের সূত্র দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত, অভিনেত্রী আত্মহত্যাই করেছেন; যদিও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ তদন্তকারীরা।

ফেসবুকে দেওয়া পল্লবীর অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুযায়ী তিনি হাওড়ার বাসিন্দা। সাঁতরাগাছি ভানুমতী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী, পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন চাকরিও করেন। এরপর কলকাতার সব বিনোদন টিভি চ্যানেলেই কাজ করেছেন বলে উল্লেখ আছে ফেসবুকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত