ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

‘মায়া শালিক’ এর গল্প কোনভাবেই কপি নয়: জাহান সুলতানা

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:০৮  
আপডেট :
 ২৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৫৯

‘মায়া শালিক’ এর গল্প কোনভাবেই কপি নয়: জাহান সুলতানা
তরুণ লেখিকা ডা: জাহান সুলতানা

ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি নিয়ে তার ভীষণ শখ, তবে পেশাদার লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন প্রায় তিন বছর আগে। বলছিলাম তরুণ লেখিকা জাহান সুলতানার কথা। এর বাইরে তার আরও একটি পরিচয় আছে, পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। নিজের ব্যস্ত সময়ের বাইরে যতটুকু সময় পান সেটা লেখালেখির মধ্যে আবদ্ধ রাখেন। এরইমধ্যে তার লেখা প্রায় ২০টির মত নাটক প্রচারে এসেছে। শুধু তাই নয়, এরইমধ্যে তিনি প্রকাশ করেছেন তার প্রথম উপন্যাস ‘অগল্প’। বছরের শেষ দিকে এসে উন্মুক্ত হয়েছে তার লেখা প্রথম ওয়েব সিনেমা ‘মায়া শালিক’, যেটি এখন দর্শকমহলে দারুণ আলোচিত ও প্রশংসিত। তাকে নিয়ে লিখেন ইমরুল নূর

আপনার লেখা প্রথম ওয়েব সিনেমা ‘মায়া শালিক’ ইতিমধ্যেই দর্শক সাড়া ফেলেছে। এ বিষয়টি নিয়ে আপনার ভালো লাগা কতটুকু?

এটা আসলে একদিনের জার্নি নয়। ‘মায়া শালিক’ এর গল্প লিখা শুরু করেছিলাম ২০২০ সালের শুরুর দিকে। প্রায় এক বছর সময় নিয়েছিলাম এটা লেখার জন্য তারপর ২০২১ সালে গল্পটার সিনোপসিজ নির্মাতা শিহাব শাহীন ভাইকে পাঠাই। গল্প পাঠানোর পর তিনি সেটা পছন্দ করেন। এরপর এটা নিয়ে অনেক রিসার্চ করেছি, রি-এডিট করেছি তারপর শিহাব ভাইয়ের পরামর্শে কিছু কারেকশন করে একটা প্রপার স্ক্রিপ্টে দাঁড় করাই। একটা কাজের সঙ্গে অনেকেই জড়িত থাকে। দিনশেষে কাজটা যখন দর্শকরা পছন্দ করে, প্রশংসায় ভাসায় তখন অবশ্যই অনেক ভালো লাগা কাজ করে। আর যেহেতু এটা আমার প্রথম ওয়েব সিনেমা, ভালো লাগার জায়গাটা একটু বেশিই।

আমাদের দেশে রোমান্টিক ও সাই-ফাই নিয়ে কাজ করতে পরিচালক-প্রযোজকরা আগ্রহ দেখায় না। সেখানে কোন ভাবনা থেকে এমন গল্প লিখেছেন?

এ ধরণের গল্প নিয়ে কাজ করতে পরিচালক-প্রযোজকরা কেন আগ্রহ দেখায় না, সেটা আমি সঠিকভাবে বলতে পারবো না। তবে আমি ছোটবেলা থেকেই সায়েন্স ফিকশন পড়তে ভীষণ পছন্দ করি, প্রচুর পড়া হয়। সেইসাথে অনেক মুভি, টিভি-সিরিজ দেখা হয়। সেই জায়গা থেকে সাই-ফাই জনরা নিয়ে লেখার আগ্রহ অনেক আগে থেকেই ছিল। সত্যি বলতে এতকিছু ভাবিনি। আগ্রহ থেকে লিখেছি এবং সেটা পরিচালক পছন্দ করেছেন আর সবশেষে দর্শকরাও পছন্দ করেছেন। ক্লিক করে গিয়েছে আর কি!

‘মায়া শালিক’ এর গল্পটিকে প্রকৃত অর্থে সায়েন্স ফিকশনও বলা যায় না। এখানে শুধু সায়েন্স ফিকশনের কিছু উপাদান রয়েছে। আমরা চেয়েছি গল্পে ম্যাজিক্যাল কিছু ফ্যান্টাসি থাকুক আর সবকিছুর ব্যাখ্যাও দিতে যাই নি। কিছু ব্যাখ্যা আমরা দর্শকের হাতে ছেড়ে দিতে চেয়েছি।

প্রশ্ন উঠেছে, মায়াশালিকের গল্প নাকি বিদেশি গল্প থেকে কপি করা। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?

মায়াশালিক গল্পের যে কনসেপ্ট তার কিছুটা অংশ ‘ইউর নেম’ থেকে অনুপ্রাণিত। আগেই বলেছি এটা ওল্ড কনসেপ্ট। কিন্তু কনটেক্সটা দেখুন, গল্পের প্লট, স্টোরিং টেলিং দেখুন। এগুলোয় ভিন্নতা পান কিনা।

কনসেপ্ট কিছু মিলে যাওয়া মানেই কিন্তু সেটা কপি নয়। কনসেপ্ট, কনটেক্সট, প্লট সবকিছুই আলাদা। এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। আমি প্রচুর সাই-ফাই মুভি দেখি, এনিমে দেখি। আমার খুব প্রিয় একটা এনিমে হচ্ছে ‘ইউর নেম’। এটা স্বীকার করতে আমার লজ্জা নেই। প্রিয় বই, প্রিয় মুভি, প্রিয় গান এসবই মানুষকে উৎসাহ দেয় নতুন কিছু সৃষ্টি করার।

দেশের বাইরে ইন্টার টাইম লাইন ক্রস কানেকশন, টাইম ট্রাভেল, টাইম লুপ, গ্র্যান্ডফাদার প্যারাডক্স, বাটারফ্লাই ইফেক্ট, দেজাভ্যু এসব কিছুর কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে গেলে দেখা যাবে সাই-ফাই জনরার সব মুভিতেই কনসেপচুয়াল কিছু না কিছু মিল পাওয়া যাবে। তার মানে কিন্তু এই না যে, একটা সিনেমা আরেকটা থেকে কপি করা হয়েছে। এক ডার্ক সিরিজে টাইম ট্রাভেল রিলেটেড সব এলিমেন্ট নিয়ে যে প্যাচ খেলা হয়েছে, এখন টাইম রিলেটেড নিয়ে কিছু বানাতে গেলেই কিন্তু ডার্কের কোন না কোন এপিসোডের সাথে কনসেপ্ট মিলে যাবে। তাই বলে কি কপি? না! আপনাকে কনটেক্সট দেখতে হবে। প্লট,স্টরি টেলি, ডিটেলিং দেখতে হবে। আপনি ছোট ছোট ডিটেইলস মিস করে গেলে অনেক কিছুর উত্তর খুঁজে পাবেন না।

আমি নিজেকে অনেক বড় লেখক দাবি করছি না কিন্তু ‘মায়া শালিক’ আমার অনেক পরিশ্রমের একটা ফসল। গল্পেই সবকিছুর উত্তর দেওয়া আছে।

উল্লেখ্য, আসছে ভালোবাসা দিবস এবং ঈদকে ঘিরে বেশকিছু নাটক আসবে জাহান সুলতানার লেখায়। এরমধ্যে প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে তার লেখা ও শিহাব শাহীনের পরিচালনায় ‘নীল জলের কাব্য’, ‘পথ বেঁধে দিলো’ ও ভিকি জাহেদের পরিচালনায় ‘কাজলের দিনরাত্রি’ ইত্যাদি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত