ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

জিন্স পরার কারণে কিশোরীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ১৩:৩৮

জিন্স পরার কারণে কিশোরীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কিশোরী নেহা পাসওয়ান ও তার মা। সংগৃহীত ছবি।

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশে গত সপ্তাহে এক কিশোরী নেহা পাসওয়ানকে (১৭) জিন্স পরার কারণে তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনেরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ওই রাজ্যের সবচাইতে পিছিয়ে পড়া দেরিয়া এলাকার একটি গ্রাম সাভরেজি খার্গে।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে নিহত নেহার মা শকুন্তলা দেবী পাসওয়ান বলেন, পোশাকআশাক নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে নেহার দাদা এবং চাচারা তাকে লাঠি দিয়ে প্রচণ্ড পেটায়।

তিনি জানান, তার মেয়ে দিনভর উপবাস পালন করছিলো। সন্ধেবেলায় ধর্মীয় আচার পালনের জন্য জিন্স ও টপ পরিধান করে। যখন তার দাদা-দাদী এটা নিয়ে আপত্তি জানান, তখন নেহা এই বলে জবাব দেয় যে, জিন্স তৈরিই করা হয়েছে পরার জন্য আর সেজন্য আমি এটা পরেছি।

এসময় ঝগড়ার মাত্রা ক্রমেই বাড়ছিলো, যা এক পর্যায়ে সহিংসতায় রূপ নেয় বলেও জানান তিনি।

শকুন্তলা দেবী বলেন, এক পর্যায়ে তার মেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে । এসময় তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অটোরিকশা ডেকে আনে এবং জানায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। তারা আমাকে সঙ্গে যেতে দেয়নি। তাই আমি আমার আত্মীয়স্বজনকে জানাই যাতে তারা সদর হাসপাতালে গিয়ে আমার মেয়ের খোঁজ নেয়। কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে তাকে খুঁজে পায়নি।

তিনি বলেন, পরদিন সকালে তিনি শুনতে পান গন্ডক নদীর ওপরের একটি সেতু থেকে একটি মেয়ের মৃতদেহ ঝুলছে। সেখানে গিয়ে তারা জানাতে পারেন, লাশটি তার মেয়ে নেহার।

তিনি জানান, তার মেয়ে পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আর কোনদিন পূরণ হবে না। তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রায়ই নেহাকে স্কুল ছাড়ার জন্য চাপ দিত এবং ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পোশাক না পরার জন্য প্রায়ই তিরস্কার করতো।

পুলিশ এ ঘটনায় দশ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও প্রমাণ নষ্টের অভিযোগে মামলা করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে নেহার দাদা-দাদী, চাচা-চাচী, চাচাতো ভাইবোন ও অটোরিকশা চালক রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা স্রিয়াশ ত্রিপাঠি বিবিসি হিন্দিকে বলেন, নেহার দাদা-দাদী, একজন চাচা এবং অটো চালককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে।

পাঞ্জাবের একটি শহর লুধিয়ানায় দিনমজুরের কাজ করেন নেহার বাবা অমরনাথ পাসওয়ান। তিনি খবর শুনে বাড়ি ফিরে এসেছেন। তিনি বলছেন, তিনি নেহাসহ তার বাকী সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত