ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

কংগ্রেসকে এড়িয়ে কেন বিজেপি বিরোধী জোট গড়ছে তৃণমূল?

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৮:৪০  
আপডেট :
 ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৮:৪৯

কংগ্রেসকে এড়িয়ে কেন বিজেপি বিরোধী জোট গড়ছে তৃণমূল?
তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ফাইল ছবি

ভারতের জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতেই একদিকে যেমন বিজেপি বনাম বিরোধীদের লড়াই শুরু হয়েছে, তেমনই শুরু হয়েছে বিরোধীদের নেতৃত্ব দেয়া নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের লড়াই।

কংগ্রেস ও তৃণমূলের লড়াই নিয়ে অনেকের চোখ কপালে উঠছে। কারণ, ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল হাত মেলাবে- এমনটাই মনে করা হচ্ছিল।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। তৃণমূল তার সমমনা আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে এগোনোর চেষ্টা করছে। এদের মধ্যে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল শিবসেনাও রয়েছে।

মঙ্গলবার ভারতের রাজ্যসভার বিরোধী নেতা ও কংগ্রেসের দলিত মুখ মল্লিকার্জুন খাড়গে বিরোধী দলগুলোর বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে ১৫টি বিরোধী দলের নেতা থাকলেও তৃণমূলের কোনো ছিলেন না।

রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে কংগ্রেসসহ বাকি দলগুলো দেখা করলেও তৃণমূল যায়নি। বেঙ্কাইয়া গত অধিবেশনে খারাপ ব্যবহারের জন্য ১২ জন বিরোধী সংসদ সদস্যকে সাসপেন্ড করেন। তার প্রতিবাদে কংগ্রেসসহ বাকি বিরোধী দলগুলো একজোট হয়ে ওয়াকআউট করলেও তৃণমূল তাদের সঙ্গে ছিল না। কয়েক মিনিট পর তারা ওয়াকআউট করে।

গান্ধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধী দলের সঙ্গে তৃণমূল সংসদ সদস্যরা ছিলেন। তবে তৃণমূল দাবি করছে, তারাই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল এবং তাতে বাকিরা সামিল হয়েছেন।

তৃণমূল সংসদ সদস্য ও রাজ্যসভার চিফ হুইপ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, তৃণমূলের বিক্ষোভের পরিকল্পনা আগে থেকেই নেয়া ছিল। অন্য দলগুলোকেও বিক্ষোভে সামিল হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।

মল্লিকার্জুন খাড়গের বৈঠকে ডিএমকে, আরজেডি, সিপিএম, শিবসেনা, এনসিপি, সিপিআই, মুসলিম লিগ, এলআইডি, এমডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স, টিআরএস, কেরালা কংগ্রেস মণি, আপ-এর মতো বিরোধী দলের নেতারা ছিলেন।

কংগ্রেসের তরফে ছিলেন রাহুল গান্ধী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, দিগ্বিজয় সিং, আনন্দ শর্মাসহ একগুচ্ছ নেতা। কিন্তু তৃণমূল ছিল না। সমাজবাদী পার্টি, বিএসপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের কেউ ছিলেন না। ফলে কংগ্রেস ১৫টির মতো দলকে পাশে পেলেও কয়েকটি প্রধান বিরোধী দল অনুপস্থিত ছিল।

সম্প্রতি কলকাতায় তৃণমূলের বৈঠকেও ঠিক হয়েছে, তারা কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বাড়াবে। সেই ছবিটা প্রথম দুই দিন সংসদের অধিবেশন থেকে স্পষ্ট।

প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভলেকে বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের কথা বলেছিলেন। আর কংগ্রেস-মুক্ত বিরোধী জোট করতে চাইছে তৃণমূল। কিন্তু ভারতের বাস্তবতা হলো, কংগ্রেসকে ছাড়া শক্তিশালী বিরোধী-জোট হতে পারে না।’

আশিসের মতে, ‘কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী জোট করার অর্থ হলো- বিজেপির হাত শক্ত করা। কারণ, এই মৃতপ্রায় কংগ্রেসই বিজেপির সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারে। তাদের শক্তি ও প্রভাব কম হলে বিজেপি তাতে লাভবান হতে বাধ্য।’

মমতার মুম্বাই সফর: মঙ্গলবারই মুম্বাই সফরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি একটি শিল্প সম্মেলনে যোগ দেবেন। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে সম্প্রতি দিল্লিতে জানিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু উদ্ধব ঠাকরে অসুস্থ বলে মমতার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। তবে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে তার বৈঠক হতে পারে।

তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশল হলো- সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি, শিবসেনা, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, কেসিআরের মতো দলগুলোকে নিজের দিকে নিয়ে আসা। আঞ্চলিক দলের জোট গঠন করা। তারা এই কৌশল সামনে রেখেই এগোচ্ছে।

কংগ্রেসে মতভেদ: কংগ্রেস সূত্র জানাচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে দলের নেতারা দ্বিমত। মল্লিকর্জুন খাড়গের মতো নেতারা মনে করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত।

কিন্তু অধীর, কে সি বেনুগোপালের মতো নেতারা মনে করেন, তৃণমূল যখন কংগ্রেস ভাঙতে সক্রিয়, তারা যখন কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতার রাস্তায় যেতে রাজি নয়, তখন তাদের বাদ দিয়ে অন্য দলগুলোকে নিয়ে চলা উচিত। রাহুল গান্ধীও দ্বিতীয় মতের পক্ষে বলে সূত্র জানাচ্ছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত