ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

জেরুজালেমে মুসলিম এলাকায় ইহুদীদের পতাকা মিছিল, উত্তেজনা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২২, ১১:৪১  
আপডেট :
 ৩০ মে ২০২২, ১১:৪৪

জেরুজালেমে মুসলিম এলাকায় ইহুদীদের পতাকা মিছিল, উত্তেজনা
ছবি, বিবিসি।

জেরুজালেমের পুরোনো নগর কেন্দ্রের মুসলিম এলাকার ভেতর দিয়ে হাজার হাজার ইসরায়েলি ইহুদী মিছিল করেছে। এ ঘটনাকে ফিলিস্তিনিদের সহিংসতা বাধার উসকানি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এটাকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ বলে মন্তব্য করেছেন। সোমবার বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নিয়েছিল, সেই বিজয় উদযাপনের জন্য ইহুদীরা এ পতাকা মিছিল করে। এবার তারা এটি উদযাপন করছে এমন এক সময়, যখন কয়েক মাস ধরে মারাত্মক সব সহিংসতার ঘটনায় দুই পক্ষের সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা চলছে।

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গন ইসরায়েলি ইহুদীদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত, এটিকে তারাও এক পবিত্র ধর্মীয় স্থান বলে দাবি করে।

গত বছর এ পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে ১১ দিন ধরে গাজায় ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলেছিল। পুরো জেরুজালেমকেই ইসরায়েল তাদের রাজধানী বলে দাবি করে। কিন্তু তাদের এ দাবি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এবং ফিলিস্তিনিরা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের একেবারে কেন্দ্রে আছে এ জেরুজালেম নগরীকে নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি। ফিলিস্তিনিরা চায় তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম। তবে ইসরায়েল বলছে, তারা এ নগরীকে কখনোই ভাগ করতে দেবে না।

আল-আকসা মসজিদে রোববার সকাল থেকেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। ইসরায়েলি পুলিশ সেখানে স্টান গ্রেনেড ছোঁড়ে, ফিলিস্তিনিরা পাল্টা পাথর নিক্ষেপ করে।

এর কিছুক্ষণ পরই একজন কট্টর ডানপন্থী ইসরায়েলি রাজনীতিকের নেতৃত্বে সেখানে পতাকা হাতে ইহুদীদের একটি বড় গোষ্ঠী এসে হাজির হয়। এরা সেখানে প্রার্থনা করারও চেষ্টা করে, যেটি বহুদিন ধরে প্রচলিত নিয়মের লঙ্ঘন।

এ মিছিলকারীরা সেখানে পতাকা হাতে নাচানাচি করে। পরে অবশ্য ইসরায়েলি পুলিশ এসে তাদের থামায়।

ফিলিস্তিনিরা ইহুদীদের এরকম কাজকর্মকে ইচ্ছেকৃত উস্কানি হিসেবে গণ্য করে। কয়েকটি উগ্রপন্থী গোষ্ঠী হুমকি দিয়েছে যে, তারা এগুলো সহ্য করবে না।

ইহুদীরা এবং অমুসলিমরা এই স্থানটি কিছু নির্দিষ্ট সময়ে পরিদর্শন করতে পারে, তবে সেখানে তারা প্রার্থনা করবে না, বা কোন ধর্মীয় প্রতীক প্রদর্শন করবে না- এরকম একটি নিয়ম মেনে চলতে হয়।

মুসলিমদের কাছে এ জায়গাটি হারাম শরিফ বলে পরিচিত; এর মধ্যেই পড়েছে আল আকসা মসজিদ। এটি ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। আর এ একই জায়গাকে ইহুদীরা বলে মাউন্ট টেম্পল, এটি তাদের ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান।

মুসলিম এলাকার ভেতর দিয়ে মিছিল : এ বছর মিছিলকারীদের পূর্ব জেরুজালেমের দামেস্ক গেইট দিয়ে মুসলিম এলাকায় ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়েছে, যেটাকে ফিলিস্তিনিরা নিন্দা করেছে। গত বছর কিন্তু তাদের এ অনুমতি দেয়া হয়নি।

বেশিরভাগ মিছিলকারী দামেস্ক গেট দিয়ে যাবে। তবে ক্ষুদ্র একটি অংশ জাফা গেট দিয়ে ইহুদী এলাকার ওয়েস্টার্ন ওয়াল পর্যন্ত যাবে। এ মিছিলে সাধারণত তরুণ ইহুদীরা যোগ দেয়। তারা জেরুজালেমের প্রাচীন অংশের অলি-গলি দিয়ে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি পতাকা দোলায়, নাচে, গান গায়।

এ বছর এই মিছিল হচ্ছে এমন এক সময়, যখন কিনা ইসরায়েলি আর ফিলিস্তিনিদের সম্পর্কে এমনিতেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সম্প্রতি ইসরায়েলিদের ওপর ইসরায়েলি-আরবরা বেশ কিছু মারাত্মক হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছে বেশ কিছু ফিলিস্তিনি।

অতি সম্প্রতি আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেকে গুলি করে হত্যার ঘটনাও উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফিলিস্তিনি তদন্তকারীরা বলেছেন, এক ইসরায়েলি সেনা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি করেছিল।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত