ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

আলিগড় ইউনিভার্সিটির সিলেবাস থেকে বাদ পড়লো মওদুদী-সাইয়িদ কুতুব

  আন্তজাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২২, ১৫:৩৫  
আপডেট :
 ০৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:৩৩

আলিগড় ইউনিভার্সিটির সিলেবাস থেকে বাদ পড়লো মওদুদী-সাইয়িদ কুতুব
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামিক বিশ্বের সুপরিচিত দু'জন দার্শনিক, পাকিস্তানের আবুল আলা মওদুদী ও মিশরের সাইয়িদ কুতুবের যাবতীয় শিক্ষা তাদের সিলেবাস থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি বা এএমইউ। বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়।

গত সপ্তাহে ভারতের বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে যৌথভাবে খোলা চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছিলেন, ভারতের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক স্টাডিজের নামে কার্যত জিহাদি কার্যক্রমের পাঠ দেয়া হচ্ছে, এগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

যদিও ওই চিঠির লেখকরা বলছেন এই পদক্ষেপই যথেষ্ট নয় - সরকারের উচিত ভারতে ইসলামিক শিক্ষার নামে ছাত্রদের ঠিক কী পড়ানো হচ্ছে তার পূর্ণাঙ্গ অডিট করা।

এরপরই আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি তাদের পাঠক্রম সংশোধন করার কথা জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র শফি কিদওয়াই বলেছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কমুক্ত রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। তা ছাড়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি বদলায়, যে শিক্ষা বহু বছর আগে প্রয়োজনীয় মনে করা হতো তা হয়তো আজ আর যুগোপযোগী থাকে না, সিলেবাস বদলানোর পক্ষে এমনও যুক্তি দিয়েছেন এএমইউ-র ওই কর্মকর্তা।

গত ২৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে লেখা ওই চিঠিতে মোট ২২জন শিক্ষাবিদ অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন নির্দিষ্টভাবে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি - আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও জামিয়া হামদর্দ।

তাদের বক্তব্য ছিলো, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু কিছু বিভাগে প্রকাশ্যে তাদের ভাষায় 'জিহাদি ইসলামিক কার্যক্রমের' পাঠ দেয়া হচ্ছে - আর হিন্দু সমাজ ও সভ্যতার ওপর সহিংস আক্রমণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার এটা একটা বড় কারণ।

চিঠির সঙ্গে যুক্ত নোটে তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছিলেন বিংশ শতাব্দীর সুপরিচিত ওয়াহাবি ভাবধারার ইসলামী লেখক আবুল আলা মওদুদীর কথা, যিনি এ ছাড়াও ছিলেন জামায়েতে ইসলামী হিন্দের প্রতিষ্ঠাতা।

চিঠিটি লেখার মূল উদ্যোক্তা 'মানুষী' ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও অধ্যাপিকা মধু পূর্ণিমা কিশওয়ার জানান, মওলানা মওদুদীর লেখা পড়ে ও তার প্রচন্ড প্রভাবের কথা জেনেই তিনি ওই চিঠিটি লেখার উদ্যোগ নেন।

তার মতে, এখানে তিনটি আপত্তিকর বিষয় রয়েছে। এক, মওদুদী সব বিধর্মী বা কাফেরের গণহত্যার ডাক দিয়েছেন, যা ভারতের মতো একটি হিন্দুপ্রধান দেশে কিছুতেই মানা যায় না। দ্বিতীয়ত, তিনি মুসলিমদের বলছেন কোনো রাষ্ট্র বা নেশন স্টেটের আইন না মেনে শুধু শরিয়াকে অনুসরণ করতে, এটাও দেশের সংবিধানবিরোধিতার সামিল। তিন, ভারতে লস্কর-ই-তৈয়বা, হুরিয়ত বা পিএফআই, এবং ভারতের বাইরে মুসলিম ব্রাদারহুডের এর মতো বহু জিহাদি ভাবধারার গোষ্ঠী মওদুদীর দ্বারা অনুপ্রাণিত। এমন কী, ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠার সময় আল-বাগদাদী পর্যন্ত মওদুদীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন।

তবে আলিগড় ইউনিভার্সিটির এই সিদ্ধান্তে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং ইসলামী শিক্ষাবিদরা এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/রাজু

  • সর্বশেষ
  • পঠিত