ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

অস্ট্রেলিয়ায় এক কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:০৭

অস্ট্রেলিয়ায় এক কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি

গত সপ্তাহে বিষ্ফোরক এক ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার টেলিকমিউনিকেশন খাতের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান অপটাস। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় এক কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসি জানায়, দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগ লোকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির এই ঘটনাকে 'সাইবার হামলা' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে অপটাস।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই হতে পারে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তথ্য চুরির ঘটনা। তবে এই সপ্তাহে আরও কিছু নাটকীয় ঘটনা দেখা গেছে। এর মধ্যে আছে মুক্তিপণের হুমকি, উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং এটি হ্যাকের ঘটনা কি-না তা যাচাই করা।

তবে এখন প্রশ্ন উঠেছে অস্ট্রেলিয়ার সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। যদি তথ্য চুরিই হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়া কীভাবে ব্যক্তিগত তথ্য ও প্রাইভেসির বিষয়টি দেখভাল করে। গত বৃহস্পতিবার অ্যালার্ম বেজেছিলো

অপটাস সিঙ্গাপুর টেলিকমিউনিকেশন লিঃ-এর একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান। তারা ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পর প্রকাশ করে যে নেটওয়ার্কে সন্দেহভাজন কার্যক্রমের বিষয়টি তাদের দৃষ্টিতে এসেছে।

অপটাস জানায় যে, তাদের সাবেক ও বর্তমান গ্রাহকদের ডাটা (তথ্য) চুরি হয়েছে। এর মধ্যে আছে নাম, জন্মতারিখ, ফোন নাম্বার, ই-মেইল ঠিকানা, পাসপোর্ট নাম্বার এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার।

অপটাস বলছে, তারা ঘটনাটির তদন্ত করছে এবং পুলিশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এতো বড় চুরির ঘটনাটি দেশের বাইরে থেকে সংঘটিত হয়েছে।

এদিকে এমন ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন অপটাসের প্রধান নির্বাহী কেলি বায়ের রোজমারিন। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি একটি 'নিখুঁত হামলা'। সেই সাথে তিনি দাবি করেছেন যে তার কোম্পানির সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই শক্তিশালী।

তিনি বলেন, অবশ্যই, আমি ক্ষুব্ধ যে একদল ব্যক্তি আমাদের গ্রাহকদের সাথে এটা করতে চেয়েছে এবং আমি হতাশ কারণ আমরা সেটি ঠেকাতে পারিনি।

এর আগে শনিবার একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী একটি অনলাইন ফোরামে কিছু নমুনা প্রকাশ করেন এবং অপটাস থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে এক মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেন।

কোম্পানিটিকে এটি পরিশোধের জন্য এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়। তা না হলে চুরি করা তথ্য বিক্রির হুমকি দেয়া হয়। তদন্তকারীরা এখনো ওই ব্যক্তির দাবির বিষয়টি যাচাই করে দেখতে পারেনি। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন যে প্রকাশিত নমুনার কিছু তাদের কাছে সত্যি মনে হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া সরকার এ ঘটনাকে নজিরবিহীন আখ্যায়িত করেছে এবং অপ্টাসকে দোষারোপ করে বলেছে যে তারা জানালা কার্যকর ভাবে খুলে রেখেছিলো, যাতে স্পর্শকাতর তথ্য চুরি হতে পারে।

সোমবার এবিসি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাতকারে সাইবার সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নেইলকেও এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিলো যে তিনিও অপ্টাসের মতো নিখুঁত হামলাকেই একমাত্র কারণ মনে করেন কি-না। তিনি বলেছেন , না। এটি তা ছিলো না।

বেয়ার রোজমারিন মঙ্গলবার নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়াকে বলেছেন, "আমাদের কয়েক স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা আছে। সুতরাং এটা শুধু সফটওয়্যার ইন্টারফেসে প্রবেশের বিষয় নয়। আমি মনে করি বেশিরভাগ গ্রাহকরাই বুঝতে পেরেছেন যে আমরা ভিলেন নই। তবে একই সাথে তিনি বলেছেন যে যেহেতু তদন্ত চলছে, তাই অপটাস এ বিষয়ে এখন আর কিছু বলতে পারে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/মনির

  • সর্বশেষ
  • পঠিত