ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৯  
আপডেট :
 ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:০৩

শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি

আগামী সেপ্টেম্বরে অর্থাৎ বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে নয়াদিল্লি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। উপলক্ষ্য অবশ্য জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়া। যদিও বাংলাদেশ এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীভুক্ত দেশ নয়। কিন্তু এ বারের সভাপতি ও আয়োজক রাষ্ট্র ভারত। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকেই অতিথি দেশ হিসেবে সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ঢাকাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ঢাকা এই আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জি-২০ সম্মেলনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু কন্যা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, নির্বাচনের আগে দ্বীপাক্ষিক এই বৈঠক বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বছর ভারতের কাছ থেকে বেশ কিছু ‘কূটনৈতিক উপহার’ আশা করছে হাসিনা সরকার। ঘরোয়া রাজনীতিতে ভারত-বিদ্বেষী একটা বড় অংশের মুখ বন্ধ করতে তা সহায়ক হবে বলেই মনে করছে আওয়ামী লীগ সরকার।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের এই সম্ভাব্য সফরকে সফল করার জন্য কিছু বিষয়কে চিহ্নিত করতে চাইছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে রয়েছে আগামী কয়েক মাসে দ্বিপাক্ষিক জটগুলো খুলতে পারলে মোদী-হাসিনার বৈঠক সফল হবে। যা নির্বাচনের আগে যথেষ্ট ইতিবাচক আবহাওয়া তৈরি করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে বিষয়গুলোর উপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে ঢাকা, তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যা। বিষয়টি দেশবাসীর আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। ঢাকার বক্তব্য, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে কোনও হত্যা ঘটছে না, কিন্তু দেখা যাচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঘটছে।

সম্প্রতি ঢাকায় একটি সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়র আলম বলেছেন, আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা (সীমান্ত হত্যা) যে একটা বিরক্তিকর জায়গা, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এটা আমাদের বিব্রত করে। আমাদের সম্পর্কটাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে না পারার একটা কারণ হল সীমান্ত হত্যা।

তিনি আরও বলেন, ভারতের কাছে অপ্রিয় সত্য তুলে ধরতে কখনও পিছপা হইনি। গত সপ্তাহে সীমান্ত হত্যার বিষয়টি ভারতের কাছে আমরা কূটনৈতিক ভাষায় জানিয়েছি।

দ্বিতীয়ত, ঢাকা চাইছে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের রপ্তানিতে ভারত নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কিছুটা সরবরাহের কোটা বহাল রাখতে। তার কারণ যে মুহূর্তে নয়াদিল্লি পেঁয়াজ বা গম বা ডালের মতো পণ্য রফতানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, বাংলাদেশের বাজারে তা অগ্নিমূল্য হয়ে ওঠে। আপাতত গম রফতানি ভারত বন্ধ করায় বাংলাদেশকে কানাডা থেকে গম আমদানি করতে হচ্ছে। এতে খরচ বেশি পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দুইদেশের ঐকমত্য হয়েছে। কথা চলছে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও।

পাশাপাশি আরও একটি বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষোভ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাটজাত পণ্যে ভারতের বাজারে অবাধ রপ্তানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ‘অ্যান্টি ডাম্পিং’ শুল্কের মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। ঢাকা আশা করেছিল এটা আর নবায়ন করা হবে না।

কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, বাংলাদেশ এবং নেপাল থেকে পাটজাত পণ্য ভারতে রপ্তানি হবে তাতে আগামী পাঁচ বছর শুল্ক জারি থাকবে। ঢাকার বক্তব্য, নেপাল থেকে পাটজাত পণ্য ভারতে সামান্যই আসে। অর্থাৎ এটি বাংলাদেশের কথা ভেবেই চাপানো হয়েছে। শেখ হাসিনার ভারত সফরের এটির পরিবর্তন করার বিষয়েও আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়াও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরানো নিয়ে মিয়ানমারের ওপর নয়াদিল্লির চাপ বাড়াতে চায় ঢাকা। ভারতের পাশাপাশি চীনের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। কারণ মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের উপর প্রভাব বজায় রাখার দায় চীন এবং ভারত উভয়েরই রয়েছে। মিয়ানমারকে সঙ্গে রাখা বেইজিং এবং নয়াদিল্লির কৌশলগত বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে।

এর আগে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ৪ দিনের সফরে ভারতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত