ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

পুলিশের মারধরেই মৃত্যু কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের, ভিডিওতে প্রমাণিত

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:২৯  
আপডেট :
 ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৩৩

পুলিশের মারধরেই মৃত্যু কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের, ভিডিওতে প্রমাণিত
টায়ার নিকোলাস। ছবি: সংগৃহীত

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিসে মারধরে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার হিংসাত্মক মারধরের মর্মান্তিক ভিডিও প্রকাশ করেছে পুলিশ।

শুক্রবার অফিসারদের বুকে বসানো ক্যামেরা ও গাড়ির ড্যাশবোর্ড ক্যামেরার ভিডিও প্রকাশ করেছে মেমফিস পুলিশ, যেখানে নির্যাতনের ছবি ফুটে উঠেছে। ভিডিও দেখা যাচ্ছে, নিকোলাস মাটিতে পড়ে রয়েছে এবং একজনকে তাকে লাথি মারতে দেখা গেছে। এসময় তাকে অন্তত তিনবার ‘মা’ বলে কাতরে উঠতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার মুখে লাথি ও ঘুষি পড়া বন্ধ হয়নি।

সবচেয়ে দীর্ঘ যে চারটি ভিডিও পাওয়া যায় এর মধ্যে একটি ভিডিও ক্লিপে নিকোলসকে চালকের আসন থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা গেছে। এরপর তার ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিলেন এক অফিসার। সেই অবস্থায় অন্য একজন লাগাতার লাথি মেরে যাচ্ছেন। মার খাওয়ার সময় নিকোলাসকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি কিছু করিনি। আপনারা এমন করতে পারেন না।’

প্রবল মারধরে নিকোলাসকে মাথা গুঁজে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে একজন এসে তাকে তুলে বসিয়ে দেন পুলিশের গাড়িতে হেলান দিয়ে।

ভিডিওটি প্রকাশের পর শুক্রবার রাতে মেমফিসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়,বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে মেম্ফিসে জড়ো হয়ে ‘বিচার নেই, শান্তি নেই’ স্লোগান দিতে এবং ‘গণদাবি: পুলিশি সন্ত্রাস বন্ধ কর’ প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে। কিছু বিক্ষোভকারী শহরের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে, যখন দেশের অন্যত্র ছোট আকারের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত ৭ জানুয়ারি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন টায়ার নিকোলাস নামের ২৯ বছরের এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। সে সময় মেমফিস পুলিশ ডিপার্টেমেন্টের ৫ অফিসার নিকোলাসের গাড়ি আটকায়। এর পর পাঁচ জন পুলিশ অফিসার ব্যাপক মারধর করেন বলে অভিযোগ। এতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন নিকোলাস। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১০ জানুয়ারি সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এর পরই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও প্রতিবাদ শুরু হয়।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি ভয়াবহ ভিডিওটি দেখে তিনি ‘ক্ষুব্ধ’ এবং ‘গভীরভাবে বেদনাগ্রস্ত’ হয়েছেন।

নিকোলাসের পরিবারের আইনজীবীরা ১৯৯১ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের গাড়িচালক রডনি কিংকে পুলিশের মারধরের সাথে এই হামলার তুলনা করেছেন।

মেমফিস পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে উঠে আসে অভিযুক্ত পাঁচ অফিসার অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছিলেন। যার প্রয়োজন ছিল না। এর পর পুলিশ বিভাগ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল ওই পাঁচ অফিসারকে।

বৃহস্পতিবারই তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে উত্তেজনাপূর্ণ আক্রমণ, অপহরণ, অফিসিয়াল অসদাচরণ এবং অফিসিয়াল নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। ওই পাঁচ পুলিশ অফিসারও কৃষ্ণাঙ্গ ।

এদিকে বৃহস্পতিবার নিহত নিকোলাসের পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসুচির আহবান জানালে বাইডেন সেখানে যোগ দিয়ে বলেন, বিচার বিভাগ এই হত্যাকান্ডের তদন্ত করছে এবং রাজ্য কর্তৃপক্ষও তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ডাকে নিকোলাসের পরিবারের সাথে আছি। বাইডেন বলেন, ক্ষোভ যুক্তি সঙ্গত, কিন্তু সহিংসতা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মে মাসে এক পুলিশ অফিসারের মারধরে মৃত্যু হয়েছিল জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির। ফ্লয়েডের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে, প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল কৃষ্ণাঙ্গসহ লাখো মানুষ। মিনেপোলিসের এক পুলিশ অফিসার কী ভাবে জর্জ ফ্লয়েডের গলায় পা চেপে ধরেছিলেন তা দেখেছিলেন গোটা বিশ্ব। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়ে মার্কিন পুলিশকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত