ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

আদানি ইস্যুতে আবারও উত্তাল ভারতীয় সংসদ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৫০  
আপডেট :
 ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:১৫

আদানি ইস্যুতে আবারও উত্তাল ভারতীয় সংসদ
ভারতীয় সংসদ। ছবি: সংগৃহীত

আদানি ইস্যু নিয়ে শুক্রবারও উত্তাল ভারতীয় সংসদ। পুরো ঘটনায় যৌথ সংসদীয় কমিটি বা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবিতে হট্টগোল শুরু করেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদরা। তার জেরে আগামী সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংসদের দুই কক্ষ লোকসভা এবং রাজ্যসভা মুলতুবি ঘোষণা করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার বাজেট অধিবেশনের চতুর্থ দিনে আদানি ইস্যু নিয়ে আলোচনার আর্জি জানান রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লির্কাজুন খাড়গে, কংগ্রেসের রাজ্যসভা সৈয়দ নাসির হুসেন, শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। সেই পরিস্থিতিতে সংসদের দুই কক্ষে তুমুল হই-হট্টগোল শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে দুপুর দুইটা পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করা হয়। অধিবেশন ফের শুরু হওয়ার পরও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। তার জেরে সোমবার পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেয়া হয়। পরে রাজ্যসভাও মুলতুবি হয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, শতাব্দীর সবথেকে বড় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ২৬৭ ধারার আওতায় নোটিশ দিয়েছিলাম আমরা। আমরা যৌথ সংসদীয় কমিটি বা প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্তের আবেদন জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, যখন কোটি-কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে, তখন ইডি এবং আয়কর দপ্তর কোথায় ছিল? সরকারের চোখের সামনে শতাব্দীর সবথেকে বড় দুর্নীতি হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তের আবেদন জানাচ্ছি। আমরা বরাবর বলে আসছি, শুধুমাত্র নিজের বন্ধুদের সুবিধা পাইয়ে দেয়ার জন্য সরকারি নীতি নেয়া হচ্ছে।

যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়ালের পালটা বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, গতকালও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের জন্য এসেছি। যখন আলোচনা হবে, তখন আমরা যা খুশি করতে পারেন। কিন্তু বিরোধী সাংসদরা হয়ত সংসদকে কাজ করতে দিতে চান না। আমরা তাদের কাছে সংসদকে কাজ করতে দেয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবারও অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই সংসদের উভয়কক্ষে বিভিন্ন ইস্যুতে হৈচৈ শুরু করেন বিরোধীরা। মূলত শিল্পপতি গৌতম আদানি গোষ্ঠীর সঙ্কট নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলেন বিরোধীরা। সেই দাবি নিয়ে সংসদের দুই কক্ষে হট্টগোল শুরু হতেই প্রথমে দুপুর দুইটা পর্যন্ত মুলতবি করা হয় রাজ্যসভার অধিবেশন। অধিবেশন ফের শুরু হওয়ার পরও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় শুক্রবার পর্যন্ত উভয় কক্ষের অধিবেশন মুলতুবি করা হয়।

এদিকে শুক্রবার আদানি গ্রুপ নিয়ে বৈঠক ডাকেন কংগ্রেসের সভাপতি খাড়গে। সেই বৈঠকে ১৬ টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধির দেখা মেলেনি। বৃহস্পতিবার অবশ্য খাড়গের বৈঠকে হাজির ছিল তৃণমূল। কিন্তু শুক্রবার না থাকায় তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছে সিপিআইএম। একইসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগেছেন সুজন চক্রবর্তী।

গত সপ্তাহে ভারতের বৃহৎতম শিল্পগোষ্ঠী আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থাহিনডেনবার্গ। হিনডেনবার্গের অভিযোগ, কৃত্রিম ভাবে শেয়ারের দর কয়েক গুণ বাড়িয়ে আদানিরা বিশাল সম্পদ তৈরি করেছেন। কারচুপি করেই গত ৩ বছরে আদানির শেয়ার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৮০০ শতাংশের বেশি।

হিনডেনবার্গের এই রিপোর্টের জেরে আদানিদের শেয়ারের দাম মুখ থুবড়ে পড়ছে। রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই শেয়ার বাজারে হু হু করে কমতে থাকে আদানিদের শেয়ারের দাম। গত কয়েক দিনে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এই সংস্থা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৮০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিশ্বের র্শীষ ধনীদের তালিকায় গৌতম আদানি তিন থেকে ১৭তম স্থানে নেমে এসেছেন। ফোর্বসের বিলিনিয়ার ইনডেক্সে অনুসারে, শুক্রবার গৌতম আদানি সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬১.৯ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশে জার্নাল/এমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত