ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ হাজার

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:২৭  
আপডেট :
 ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৩৪

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ হাজার
প্রতি মিনিটেই ধ্বংসস্তুপের নিচে থেকে মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

ক্রমশ বেড়েই চলছে তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তুরস্কেই মারা গেছেন ৩ হাজার ৪১৯ জন। অন্যদিকে সিরিয়ায় ১ হাজার ৬০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুই দেশে এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন ১৭ হাজারের বেশি মানুষ এবং অন্তত ৬ হাজার ২১৭টি ভবন ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, তুরস্কে মৃতের সংখ্যা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ হাজার ৯২১ থেকে বেড়ে ৩ হাজার ৪১৯ জনে পৌঁছেছে।

তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতাই বলেছেন, তুরস্কের ১০টি প্রদেশে ১৫ হাজার ৩৮৪ জন আহত হয়েছেন এবং ৭ হাজার ৮৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি ও অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

অন্যদিকে, সিরিয়ায় সর্বশেষ ১ হাজার ৬০০ জনের মৃত্যু ও ৩ হাজার ৭০০ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে কতৃপক্ষ।

সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের, সিরিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মৃতের সংখ্যা ৮১২ জনে পৌঁছেছে, প্রায় ১ হাজার ৪৫০ জন আহত হয়েছে। এছাড়াও দেশটির বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমে উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্বদানকারী প্যারামেডিক গ্রুপ হোয়াইট হেলমেটস বলেছে, এই অঞ্চলে কমপক্ষে ৭৯০ জন নিহত এবং ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

আরও পড়ুন, তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াতে পারে: ডব্লিউএইচও

শীতল তাপমাত্রা এবং তুষারঝড়ের ত্রাণ প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে, উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া লোকজনকে রক্ষা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এছাড়াও ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় তীব্র ঠান্ডার মধ্যে বহু মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয়েছে। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণে অনেক মানুষকে জটলা হয়ে বসে থাকার ছবিও তুলে এনেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

এদিকে, ভূমিকম্পে দুই দেশে নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দেশ দুটিতে আরও ভবন ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচওর ইউরোপ অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ জরুরি কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আরও (ভবন) ধসের শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা নিহতের প্রাথমিক সংখ্যা আটগুণ বাড়ার আশঙ্কা করছি। সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় দেশ দুটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬০০ জন। সেই হিসাবে এর সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্যাথরিন।

ক্যাথরিন বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় একই জিনিস দেখতে পাই, তা হলো প্রাথমিক খবরে পাওয়া হতাহতের সংখ্যা পরবর্তী সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

তিনি সর্তক করেছেন, শীতের মাঝামাঝি তাপমাত্রা এবং তুষারঝড়ের অবস্থার আশ্রয় ছাড়া বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। যা করেনার মত শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসের সঞ্চালন করবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যারা তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে না তারা সম্মিলিত পরিবেশে মিলিত হবে এবং জড়ো হবে। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তাদেরর জন্য মারাত্বক ঝুঁকি তৈরি করবে যদি তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা না করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপ শহরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পের পর আরও অন্তত ৭৭টি আফটারশক (পরাঘাত) অনুভূত হয়, যার মধ্যে তিনটি ছিলো রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার বেশি। আবার একটির মাত্রা ছিলো ৭ দশমিক ৫।

সূত্র: এপি, আলজাজিরা

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত