চলতি বছর সাড়ে ৬ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য হত্যার দাবি রাশিয়ার

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর চিকিত্সকরা একজন আহত সৈনিককে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকেই কিয়েভের বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি এবং নিজেদের অগ্রগতির পরিসংখ্যান দিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবারও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সম্মেলন চলাকালীন নতুন একটি পরিসংখ্যা তুলে ধরেছেন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু।

সম্মেলনে শোইগু জানান, শুধুমাত্র ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ইউক্রেনের সাড়ে ৬ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়াও তাদের ২৬টি যুদ্ধবিমান, সাতটি হেলিকপ্টার, ২০৮টি ড্রোন, ৩৪১টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সাঁজোয়া যুদ্ধ যান এবং একাধিক লঞ্চ রকেট সিস্টেম সহ ৪০টি যুদ্ধ যান ধ্বংস করা হয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দাবি, এই ধরনের ক্ষতির সাথে তারা কখনও সামরিকভাবে রাশিয়াকে পরাজিত করতে পারবে না বুঝতে পেরেছে ইউক্রেন। তাই রাশিয়ার নতুন অধিগ্রহণকৃত অঞ্চলগুলোতে বেসামরিক জনগণকে আতঙ্কিত করার লক্ষ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অবলম্বন অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। 

সম্মেলনে শোইগু অভিযোগ করেন,  ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল এবং যেখানে বেসামরিক লোকজন জড়ো হয় সেখানে হামলা চালায় এবং রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সুবিধাগুলিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে। এই ধরনের কাজগুলি ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের বর্বর প্রকৃতির প্রমাণ।

শোইগু আরও উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেনীয় পক্ষ জানুয়ারির শুরুতে অর্থোডক্স ক্রিসমাসের সময় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে অস্বীকার করেছিল এবং ছুটির সময় বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে তীব্র গোলাবর্ষণ চালিয়েছিল। কিয়েভের বাহিনী এই সময়ের মধ্যে ৫০০ টিরও বেশি আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের সংঘাত দীর্ঘায়িত করার জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ডোনেটস্ক এবং জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম সফলভাবে দখল করেছে রাশিয়ান বাহিনী। 

এদিকে জানুয়ারির শেষের দিকে নরওয়ের সেনা প্রধান দাবি করেছিলেন, ১১ মাস ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত রাশিয়ার এক লাখ ৮০ হাজার রুশ সৈন্য নিহত কিংবা আহত এবং ইউক্রেনের সেনা হতাহতের সংখ্যা এক লাখ এবং ৩০ হাজার বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে। যা ১১ মাস ধরে চলা সংঘাতে কোনও দেশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হতাহতের অনুমান। তবে সংখ্যাগুলো কীভাবে গণনা করা হয়েছিল তা তিনি উল্লেখ করেনি।

এরআগে গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মিলি বলেছিলেন, এই যুদ্ধে রাশিয়ার এক লাখেরও বেশি সৈন্য নিহত কিংবা আহত হয়েছে। ইউক্রেনের সম্ভবত একই সংখ্যার হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন শীর্ষ এই মার্কিন জেনারেল।

যদিও নিরপেক্ষভাবে এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কারন গত কয়েক মাস ধরে মস্কো ও কিয়েভ তাদের ক্ষয়ক্ষতির নির্ভরযোগ্য কোন তথ্য প্রকাশ করেনি।

অন্যদিকে জাতিসংঘ বলছে, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর এ পর্যন্ত অন্তত এক কোটি বিশ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এর মধ্যে ৫০ লাখের বেশি মানুষ পাশের দেশগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ইউক্রেনের ভেতরেই বাস্তুচ্যূত হয়ে অন্য অঞ্চলে চলে গেছে। তবে উদ্বাস্তু হওয়া হাজার হাজার মানুষ এর মধ্যে আবার তাদের বাড়িঘরে ফিরেছে, বিশেষ করে কিয়েভে।

সূত্র: আরটি

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর