ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

দেশে দেশে রকমারি ইফতারি

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩, ১৫:৪৭

দেশে দেশে রকমারি ইফতারি
ফাইল ছবি

রোজার অপরিহার্য অনুষঙ্গ ইফতারি। বাংলাদেশে বাহারি নাম আর লোভনীয় স্বাদে রয়েছে নানা ধরনের ইফতারি। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ নানা স্বাদের খাবার দিয়ে ইফতার করেন। কোথাও কোথাও একই দেশে অঞ্চলভেদে ইফতারসামগ্রীতে পার্থক্য দেখা যায়। বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা কী ধরনের খাবার দিয়ে ইফতার করে থাকেন। এসব নিয়েই এবারের আয়োজন।

সৌদি আরবে

প্রতিদিন লাখো মুসলিম একসঙ্গে বসে ইফতার করেন সৌদি আরবে। ইফতারের তালিকায় থাকে বহু মুখরোচক খাবার। নানা ধরনের হালুয়া আরবের ইফতারে অন্যতম প্রধান বিষয়। এছাড়াও থাকে ২ ধরনের রুটি। বড় রুটিটিকে বলা হয় 'তমিজ', অপেক্ষাকৃত ছোট ও ভারি রুটির নাম 'খবুজ'। থাকে 'সাম্বুচা' নামের একটি খাবারও বোরাক (মাংসের পিঠা), । যার সঙ্গে নাম ও ধরনের মিল রয়েছে আমাদের অতি পরিচিত সমুচার। এই সমুচায় মরিচ ছাড়াই মাংসের কিমা ভর্তি থাকে। ঝাল-মিষ্টির সঙ্গে স্বাস্থ্যের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সালাতা নামের সালাদটিও আরব দেশের ইফতারে অন্য মাত্রা যোগ করে। তাছাড়া পানীয় হিসেবে সরবা বা শরবত আর দুগ্ধজাত লাবান তো থাকেই।

ইরান

ইরানিরা ঐতিহ্যগতভাবে ইফতারে খেজুর সঙ্গে এক কাপ চা অথবা গরম পানি পান করেন। চা, রুটি, পনির, সতেজ শাক-সবজি খান তারা। এছাড়া মিষ্টির তালিকায় থাকে জুলবিয়া ও বামিহ নামের ২টি ঐতিহ্যবাহী পার্সিয়ান মিষ্টি। চিনির শিরাতে ডোবানো থাকে এই মিষ্টিগুলো। ইরানে তৈরি করা এক বিশেষ ধরনের স্যুপও ইফতারের সময় বেশ প্রচলিত। অ্যাশ রেশতেহ নামে এই স্যুপে থাকে চিকন নুডলস, দুগ্ধজাত মাঠার মতো জলীয় দ্রবণ এবং সঙ্গে পার্সলে, পালং, পেঁয়াজের মতো অন্যান্য উপাদান। বুটের ডাল ও মাংস সহযোগে তৈরি শামি কাবাবও ইরানি ইফতারের অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপাদান।

মিশর

উষ্ণ আবহাওয়ার অঞ্চল হবার কারণে মিশরে ইফতারে শীতল পানীয় ও সতেজ ফলমূলের বিশেষ কদর রয়েছে। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের কুনাফা নামের মিষ্টিজাতীয় খাবারটি মিশরে ইফতার হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই খাবারটি চাইলে খুব সহজে লাচ্ছা সেমাই দিয়ে তৈরি করা যায়। ইফতারের সময় ইসলাম ধর্মাবলম্বী মিশরবাসীরা রং-বেরঙের বাহারি বাতি জ্বালায়। বেশিরভাগ ঘরে রোজা ভাঙা হয় বাদামি রুটির সঙ্গে 'ফুল মেডামেস' বা ফাভা বিনের তৈরি একটি তরকারি দিয়ে। পানীয়র জন্য অ্যাপ্রিকট বা খুবানির খোসা ব্যবহার করা হয়। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে শরবত তৈরি করা হয়। শরবতটির বিশেষ নাম হচ্ছে 'কামার আল-দ্বীন', যার অর্থ 'ধর্মের চাঁদ'।

আফগানিস্তান

আফগানিস্তানে ইফতার তালিকায় থাকে একধরনের বিশেষ স্যুপ বা সুরওয়া, ভেড়ার মাংসের দোপেঁয়াজা, কোরমা-এ-মুরগ বা মুরগির কোর্মা, কোর্মা-এ-গোশফান্দ বা খাসির কোরমা, বিভিন্ন ধরনের পাকোড়া, মিষ্টি হিসেবে শিরনি বা খোরমা ইত্যাদি খাবার। মান্টু নামে আরেকটি বিশেষ পদ থাকে। এটি মূলত ভাপে রান্না করা পেঁয়াজ আর মুরগির পুর ভর্তি ডাম্পলিং। এছাড়াও নামে ও স্বাদে আফগানি আমেজ বজায় রাখতে ইফতারে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে কাবুলি পোলাও থাকে।

পাকিস্তান

পাকিস্তানিরা ইফতারে বেশ ভারি খাবার খেয়ে থাকেন। এর মধ্যে ভাজাপোড়ার পরিমাণও অনেক। সমুচা, তেলে ভাজা পাকোড়া, নিমকি জাতীয় নামাক পাড়া, ছোলা চাট, বিভিন্ন ধরনের কাবাব, দাহি ভাল্লা ইত্যাদি খাবার পাকিস্তানি ইফতারে বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও পানীয় হিসেবে রুহ আফজার কদর এ দেশে সবচেয়ে বেশি। অনেকে অবশ্য স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারও পছন্দ করেন।

দুবাই

খেজুর ও দুধ এই দুটি আইটেম ইফতারের ক্ষেত্রে খুবই জনপ্রিয় দুবাইয়ে। তারা বেশ ভারী ইফতার করতে পছন্দ করেন। রোজা ভাঙার পর খেয়ে থাকেন হারিরা নামক ভেড়ার মাংস ও মসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা বিশেষ এক ধরনের স্যুপ। এছাড়া আছে মালফুফ। এটি তৈরি করা হয় মাংস, ভেজিটেবল রোলের সাহায্যে। ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি ‘ওউজি’। রয়েছে আরেকটি জনপ্রিয় খাদ্য নাম কউশা মাহসি। এটি মাছের তৈরি একটি খাবার। এছাড়া মিষ্টান্ন হিসেবে থাকে চিজ দিয়ে তৈরি পেস্ট্রি যার নাম ‘কুনাফেহ’। তাদের এই আয়োজনকে সম্মিলিতভাবে ‘মেজে’ বলা হয়। তবে এলাকাভেদে এদের খাবারের বৈচিত্র্য ও ভিন্নতাও দেখা দেয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত