দেশ স্বাধীন হলেও রাজবাড়ী মুক্ত হয় ১৮ ডিসেম্বর
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:১২
মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজবাড়ী ছিল বিহারি অধ্যুষিত অঞ্চল। এখানে ছিল প্রায় ২০ হাজার অবাঙালি বিহারির আবাসস্থল। যে কারণে রাজবাড়ীকে শত্রু মুক্ত করতে বেগ পেতে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের।
১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে একে একে সারাদেশ যখন বিজয়ের আনন্দে ভাসছে, তখনও রাজবাড়ীতে অবাঙালি বিহারিদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ চলছে। এক পর্যায়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রতিবেশি জেলার মুক্তিযোদ্ধারা যোগ দিয়ে বিহারিদের পরাজিত করে রাজবাড়ীকে ১৮ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত করেন। এ যুদ্ধে শহীদ হন খুশি, রফিক, সফিক, সাদি শহীদ। আহত হন অনেকে।
১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীরা আত্মসমর্পণ করলেও রাজবাড়ী শহর তখনো পাক হানাদার ও বিহারিদের কবল থেকে মুক্ত হয়নি। তারপর একে একে রাজবাড়ী, যশোর, মাগুড়া, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিবাহিনী এসে জেলা শহরে সংগঠিত হয়। এ খবরে বিহারিরা রেললাইনের পাশে অবস্থান নেয় এবং লোকো শেড থেকে ড্রাই-আইস ফ্যাক্টরি পর্যন্ত মালগাড়ী দিয়ে রেললাইন অবরুদ্ধ তৈরি করে রাখে।
মুক্তিযোদ্ধারা বিহারিদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করতে থাকলে মালগাড়ীর কারণে তাদের কোন সুবিধা আদায় করতে পারেননি। বিকল্প পথ হিসেবে যশোর থেকে আনা মর্টারের গুলিবর্ষণ শুরু করলে বিহারিদের সাথে তুমুল যুদ্ধ সংগঠিত হয়। এক পর্যায় বিহারিদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে রাজবাড়ী স্বাধীন হয়।
সাবেক রাজবাড়ী জেলা ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, রাজবাড়ীতে যুদ্ধ হয় ৮ নম্বর সেক্টেরের অধীনে এবং রাজবাড়ী শহর ছিল অবাঙালি বিহারি অধ্যুসিত অঞ্চল। ১৪ ডিসেম্বর বিকালে মুক্তিযোদ্ধারা রাজবাড়ী শহর ঘিরে ফেললে অবাঙালিদের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। এখানে প্রায় দশ হাজারের অধিক অস্ত্রধারী স্বাধীনতাবিরোধীরা থাকায় দীর্ঘ সময় যুদ্ধ করেও মুক্তিযোদ্ধারা বিহারিদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ঘিরে রেখেছিলেন। পরে যশোর, মাগুড়া, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এসে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ীকে শত্রুমুক্ত করেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/আর