ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

মিয়ানমারের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হতে বিলম্ব কেন?

  রিয়াজুল হক

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ২১:৫০

মিয়ানমারের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হতে বিলম্ব কেন?

কোনো দেশ পরপর দুইবার জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় তিনটি মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে, সেই দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের অর্থাৎ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য সুপারিশ করা হয়।

প্রথম মানদণ্ড: মাথাপিছু আয় কমপক্ষে ১২২২ মার্কিন ডলার হতে হবে।

দ্বিতীয় মানদণ্ড: মানব সম্পদ সূচকে কমপক্ষে ৬৬ বা তার বেশি পয়েন্ট থাকতে হবে।

তৃতীয় মানদণ্ড: অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে একটি দেশের পয়েন্ট ৩২ বা তার কম থাকতে হবে।

জাতিসংঘের সিডিপি'র ২০১৮ সালের ত্রিবার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের মাথাপিছু আয় (২০১৪-২০১৬ গড়) ১২৫৫ মার্কিন ডলার, মানব সম্পদ সূচকে ৬৮.৫ পয়েন্ট এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচক ৩১.৭ পয়েন্ট। অর্থাৎ ২০১৮ সালেই প্রথম তিনটির প্রত্যেকটি মানদণ্ড পূরণ করা হয়।

শুরুতেই বলা হয়েছে, সিডিপি’র পরপর দুইটি ত্রি-বার্ষিক পর্যালোচনা সভায় উক্ত মানদণ্ড তিনটি পূরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই কারণে তিন বছর পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সিডিপি'র সভায় বিষয়সমূহ পুনরায় পর্যালোচনা করা হয়।

২০২১ সালের ত্রিবার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের মাথাপিছু আয় (২০১৭-২০১৯ গড়) ১২৬৩ মার্কিন ডলার, মানব সম্পদ সূচকে ৭৩.৬ পয়েন্ট এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচক ২৪.৩ পয়েন্ট।

পরপর দুইবার ত্রিবার্ষিক সভায় তিনটি মানদণ্ডই পূরণ হওয়ার পরেও কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি ( সিডিপি) ২০২১ সালে মিয়ানমারকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বা LDC graduation এর সুপারিশ না করে ২০২৪ সালের ত্রিবার্ষিক সভায় বিষয়টি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ তিন বছর পর অনুষ্ঠিত সভায় মিয়ানমারের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়ে সিডিপি সুপারিশ করবে।

২০২১ সালে কেন মিয়ানমারকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য সুপারিশ করা হয়নি? কারণ হিসেবে, সিডিপি’র প্রতিবেদনে দেশটির উদ্বাস্তু এবং শরনার্থীদেরকে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ ভাবে পুর্নবাসনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। একই সাথে, তাদের মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রতিবেদনে ২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি, মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক দেশটিতে ইমার্জেন্সি আরোপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

মূলত উপরোক্ত কারণেই সিডিপি মিয়ানমারের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য ২০২১ সালে সুপারিশ না করে অধিক পর্যবেক্ষণের জন্য ২০২৪ সালের বৈঠক পর্যন্ত বিলম্বিত করেছে। আর সিডিপি সুপারিশ করলে জাতিসংঘের সাধারণ সভা থেকে আসবে অনুমোদন।

লেখকঃ রিয়াজুল হক, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত