ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতার নীতিমালা জরুরি’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:২৬

‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতার নীতিমালা জরুরি’

জনগণের ভরসার এখনও শেষ ঠিকানা গণমাধ্যম। এটা জাতির জন্য আয়নাস্বরূপ। যে আয়নায় ভেসে ওঠে জাতির ও দেশের প্রতিচ্ছবি। এই প্রতিচ্ছবি যারা ফুটিয়ে তোলেন তারা কেমন আছেন? প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তাদের সাংবাদিকতা করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও সংকট নিরসনে গণমাধ্যমের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা হওয়া জরুরি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গণমাধ্যম: ভূমিকা ও সঙ্কট’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ টিভি।

আলোচনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, বাংলাদেশ গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীন এবং তারা পুরোপুরি স্বাধীনতা ভোগ করছে। দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশো, অনুষ্ঠানে আলোচকরা কোনো ধরনের সেন্সর ছাড়া সরকারের কর্মকাণ্ডের যথেচ্ছা সমালোচনা করেন। এ ধরনের স্বাধীন মতপ্রকাশে সরকার কখনো হস্তক্ষেপ করে না, কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করে না।

গোলটেবিল আলোচনা সভায় কি-নোট স্পিকারের বক্তব্যে জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যম নাগরিকের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখে, তথ্য জগতে তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে। মানুষ জানতে চায়, মানুষ সমাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চায়। আর সেখানেই গণমাধ্যমের ভূমিকা। নীতিনির্ধারক, আইনসভাসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ ঘটাতে ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। গণমাধ্যমে প্রতিফলিত হয় দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা। স্বাধীনতার আগে এবং পরে বাংলাদেশের গণমাধ্যম মানুষের প্রতিটি গণতান্ত্রিক, সমাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রামের সঙ্গে থেকেছে। বাংলাদেশে গণমাধ্যম নানা ঐতিহাসিক ঘটনায়, মানুষের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থেকেছে। দুর্নীতি, সহিংসতার ইস্যুকে অনেক সময় গণমাধ্যমই সবার আগে মানুষের কাছে নিয়ে আসতে পেরেছে।

আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান বলেন, আমরা অনেক কিছুই বলছি, লিখছি কিন্তু আমরা অনেক কিছুই প্রকাশ করছি না।এর মানে হচ্ছে আমাদের নিজেদের ভেতরেই অনেক ধরনের স্ববিরোধীতা আছে। আমরা নিজেরাই অনেক সময় বাংলাদেশ বেতার বা বাংলাদেশ টেলিভিশনের মতো গণমাধ্যমের সমালোচনা করি, যখন দেখি গণমাধ্যম জনমুখী ভূমিকা রাখছে না।

ডিবিসি নিউজ সম্পাদক প্রণব সাহা বলেছেন, সাংবাদিকদের তথ্য প্রবাহের জন্য প্রতিদিনই পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। সাংবাদিকরা হচ্ছেন কাঁটা বিছানো পথে হাঁটা মানুষ। প্রতিনিয়ত তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হচ্ছে।

ঢাকা পোস্ট সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে এখন ফেসবুক ও ইউটিউবের বড় বিজ্ঞাপন বাজার। সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হলো বিজ্ঞাপন পাবলিশ করা হয়; কিন্তু আমাদের সবচেয়ে কম রেট দেয়া হয়। দেশীয় বিজ্ঞাপন ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার হচ্ছে। স্থানীয় পত্রিকা কিছু বিজ্ঞাপন পায়, টেলিভিশনে আস্তে আস্তে এ খাত থেকে আয় সংকুচিত হয়ে আসছে। দেশে ফেসবুক এবং ইউটিবের এ একচেটিয়া মনোপলি ব্যবসা বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো উদ্যোগ না নেয়া হয় তাহলে দেশের ডিজিটাল মিডিয়া এগোতে পারবে না।

নিউজ২৪ এর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আঙ্গুর নাহার মন্টি বলেন, মূলধারার সাংবাদিকতার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়া। বর্তমানে গণমাধ্যম নিয়ে আমাদের সবচেয়ে বড় যে উদ্বেগ, সেটা হচ্ছে সাংবাদিকতা ও সংবাদকর্মীরা একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আস্থার সেই জায়গাটা সাধারণ মানুষের কাছে আর নেই।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিবার্তা২৪ডটনেট সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক, একইসাথে এটার মালিকও। কাজেই সাংবাদিকতাকে দুইদিক থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। আমার মতে, সাংবাদিকতা হচ্ছে থ্যাংকলেস জব। এখানে ভালো কাজ করলে কেউ ধন্যবাদ দেবে না। আবার নাম আগে-পরের জন্যও অনেকে চার্জ করার জন্য বসে থাকে। এ সেক্টরে সংকট রয়েছে, সংকট থাকবে। তবে এটাকে সম্ভাবনায় পরিণত করতে হবে। আর যদি এ পেশার চাপের কথা বলি, তাহলে এ চাপটা সরকার ও রাজনৈতিক দল থেকে না, এটা নিজের ভেতর থেকে আসে।

জাগরণ টিভি’র প্রধান সম্পাদক এফএম শাহীনের সঞ্চালনা ও বিবার্তা২৪ডটনেট সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসির সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট কুহেলী কুদ্দুস মুক্তি, মাহমুদ সালাউদ্দিন চৌধুরী, হাবিবুর রহমান রোমেল,নাজমুল হক সিদ্দিক, বরিকুল ইসলাম বাঁধন, এস এম রাকিবুল হাসান, রবিউল রূপমসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্ট জন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত