ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

আধুনিক কবি আহসান হাবীব

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৪৬

আধুনিক কবি আহসান হাবীব
কবি আহসান হাবীব

কবি আহসান হাবীব বাংলাদেশের বিশিষ্ট আধুনিক কবি যিনি দেশ বিভাগের আগেই সমকালীন কবিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বৈরী ও প্রতিকূল পরিবেশের প্রসঙ্গ অনুষঙ্গকে চমৎকার কুশলতায় কবিতায় তুলে এনেছেন কবি আহসান হাবীব। সর্বদাই জীবন যাপনে ছিলো তার দার্শনিক বোধ।

আহসান হাবীব ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পিরোজপুরের শঙ্করপাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা হামিজুদ্দীন হাওলাদার, মা জমিলা খাতুন। পাঁচ ভাই চার বোনের পরিবারে সচ্ছলতা ছিলোনা। এই পরিবারে তিনিই প্রথম সন্তান। পারিবারিকভাবে আহসান হাবীব সাহিত্য-সংস্কৃতির আবহের মধ্যে বড় হয়েছেন৷ সেই সূত্রে বাল্যকাল থেকেই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত৷

পড়ালেখা পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল ও বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে৷ অর্থনৈতিক সংকটে কলেজের পাঠ অসমাপ্ত রেখেই কলকাতা পাড়ি জমান৷ কলকাতা গিয়ে শুরু হয় আহসান হাবীবের সংগ্রামমুখর জীবনের পথচলা। সেখানে চাকরি নেন ফজলুল হক সেলবর্ষী সম্পাদিত 'দৈনিক তকবীর' পত্রিকায়। পরবর্তীতে কলকাতার 'বুলবুল' ও 'সওগাত' পত্রিকায় কাজ করেন। এছাড়া তিনি আকাশবাণীতে কলকাতা কেন্দ্রের স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন।

তার প্রথম কবিতার বই 'রাত্রি শেষে' প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালে কমরেড পাবলিশার্স থেকে। প্রকাশক ছিলেন বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। পরবর্তী সময়ে 'ছায়া হরিণ', 'সারা দুপুর', 'আশায় বসতি', 'মেঘ বলে চৈত্রে যাবো', 'দুই হাতে দুই আদিম পাথর' এবং 'প্রেমের কবিতা'সহ বেশকিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

শিশুকিশোর রচনায় তিনি নিয়ে আসেন নতুন ব্যঞ্জনা। 'ছুটির দিনদুপুরে', 'পাখিরা ফিরে আসে' এ দুটি বাংলা শিশু সাহিত্যে তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এছাড়া শিশুকিশোরদের জন্য লেখা অন্য গ্রন্থগুলি হলো 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর', 'রেলগাড়ি ঝমাঝম', 'রাণীখালের সাঁকো', 'জোস্না রাতের গল্প', 'ছোট মামা দি গ্রেট' ইত্যাদি। আহসান হাবীবের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ৮টি। অন্যান্য লেখাসহ সব মিলিয়ে তার গ্রন্থের সংখ্যা ২৫।

সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ আহসান হাবীব ১৯৬১ সালে ইউনেস্কো সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৭৮ সালে লাভ করেন একুশে পদক। এর বাইরেও অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

আহসান হাবীব কলকাতায় ১৯৩৩-৩৪ সাল থেকে ১৯৪৯-৫০ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন। বলতে গেলে তার সাহিত্যচর্চার স্বর্ণযুগ ছিল ওই সময়ই। বিশেষ করে ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এক দশক তিনি নিরলসভাবে লিখে গেছেন। জীবনের অধিকাংশ সেরা ও বিখ্যাত কবিতা ও গল্পগুলো তিনি লিখেছেন ওই সময়েই।

১৯৫০ সালে তিনি কলকাতা থেকে দেশে ফিরে আসেন। ফিরে এসেই দৈনিক ইত্তেফাকে সাহিত্য পাতা সম্পাদনা শুরু করেন। পাশাপাশি সম্পাদনা করেন সাপ্তাহিক প্রবাহ। এক সময় ‘কথাবিতান’ নামে একটি প্রকাশনা সংস্থাও গড়ে তোলেন। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘লালসালু’র দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় তারই প্রকাশনা থেকে। ১৯৬৪ সালে যোগ দেন তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান (পরে দৈনিক বাংলা) পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে। আমৃত্যু অর্থাৎ ২১ বছর ধরে সফলভাবে তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাংলা সাহিত্যের কীর্তিমান এই কবি ও লেখক প্রয়াত হয়েছেন ১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত