ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

কমলকুমার মজুমদার: স্বাতন্ত্র্যের সন্ধানী ঔপন্যাসিক

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৫৯

কমলকুমার মজুমদার: স্বাতন্ত্র্যের সন্ধানী ঔপন্যাসিক
কমলকুমার মজুমদার

কথাসাহিত্যিক কমলকুমার মজুমদার। বিংশ শতাব্দীর একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক যিনি আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিগণিত।

তিনি বিংশ শতাব্দীর একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক। যিনি আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিগণিত। তাকে বলা হয় ‘লেখকদের লেখক’। তার সময়ের পূর্বে বাংলা কথাসাহিত্য বিশেষ করে উপন্যাস ইউরোপিয় উপন্যাসের আদলে গড়ে উঠছিল। কমলকুমার মজুমদারই সেই অনুসরণ পরিহার করেছিলেন।

তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের দুরূহতম লেখকদের একজন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। যেমন সুহাসিনীর পমেটম উপন্যাসে ২৫০ পৃষ্ঠায় যতি-চিহ্ন বিহীন মাত্র একটি বাক্য লক্ষ্য করা যায়। তিনি বাংলা সাহিত্যের দুর্বোধ্যতম লেখক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। দীক্ষিত পাঠকের কাছে কমলকুমার অবশ্যপাঠ্য লেখক হিসেবেই সমাদৃত হলেও অদ্যাবধি তিনি সাধারণ্যে পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেননি।

তিনি ১৬ নভেম্বর, ১৯১৪ সালে উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার, টাকি শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম প্রফুল্লকুমার মজুমদার ও মাতার নাম রেনুকাময়ী। বাবা প্রফুল্লচন্দ্র ছিলেন পুলিশ অফিসার। মা ছিলেন বাড়ির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের এক নিবেদিত প্রাণ। কমলকুমারের ছোটবেলাটা সেই সাংস্কৃতিক পারিবারিক আবহাওয়াতেই কেটেছে।

তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত শহর টাকিতে। তবে তাদের কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউতে একটা ভাড়াবাড়ি ছিল। বছর ছয়েক বয়সে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বিষ্ণুপুরের ‘বিষ্ণুপুর শিক্ষা সংঘ’ স্কুলে কমলকুমার ও তার ভাই নীরদের সঙ্গে একই শ্রেণিতে ভর্তি হন। কয়েক বছর পর সেখান থেকে কলকাতার ক্যাথিড্রাল মিশনারি স্কুলে। এখানেও বেশি দিন তার মন টেকেনি। সংস্কৃত ভাষা শিখতে ভর্তি হলেন ভবানীপুরের এক সংস্কৃত টোলে। কমলকুমার মজুমদার ছিলেন প্রখ্যাত বাঙালি চিত্রকর নীরদ মজুমদারের (১৯১৬ - ১৯৮২) জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। তাদের কনিষ্ঠা ভগিনী শানু লাহিড়ী ছিলেন প্রখ্যাত চিত্রকর ও চিত্রকলার প্রশিক্ষক।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে, বাংলা সরকারের জনগণনা বিভাগ, গ্রামীণ শিল্প ও কারুশিল্প, ললিতকলা একাডেমি এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। এছাড়াও তিনি ছবি, নাটক, কাঠের কাজ, ছোটদের আঁকা শেখানো, ব্যালেনৃত্যের পরিকল্পনা, চিত্রনাট্য রচনা করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।

১৯৬৯ সালে তার প্রথম গ্রন্থ 'অন্তর্জলি যাত্রা' প্রকাশিত হয়। ১৯৭০ সালে তার দ্বিতীয় গ্রন্থ 'নিম অন্নপূর্ণা' প্রকাশিত হয়। পরবর্তী গ্রন্থাবলি : গল্পসংগ্রহ, পিঞ্জরে বসিয়া শুক, খেলার প্রতিভা ও দানসা ফকির।

বিখ্যাত উপন্যাসসমূহ তিনি বিচিত্র বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। তার বিখ্যাত উপন্যাসসমূহ হল: অন্তর্জলী যাত্রা, গোলাপ সুন্দরী, অনিলা স্মরণে, শ্যাম-নৌকা, সুহাসিনীর পমেটম, পিঞ্জরে বসিয়া শুক এবং খেলার প্রতিভা। ছোটগল্প গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: নিম অন্নপূর্ণা, গল্প সংগ্রহ।

১৯৭৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এই ‘লেখকদের লেখক’ মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত