ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ: আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের কণ্ঠস্বর

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:১৪

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ: আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের কণ্ঠস্বর
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বাংলাদেশের কবিতার ইতিহাসের তৃতীয় প্রজন্মের কবি। পঞ্চাশের দশকে একুশের চেতনা, বাঙালি জাতীয়তাবোধ ও স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলা সাহিত্যে একঝাঁক তারুণ্যদীপ্ত কবির অভিষেক ঘটে, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ তাদের অন্যতম। সরকারের সচিব, মন্ত্রী, উপদেষ্টার পরিচয় ছাপিয়ে একজন কবি হিসেবেই তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি জীবনে যা কিছু করেছেন, শেষ পর্যন্ত কাব্যচর্চাই তার অনিবার্য গন্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা। ১৯৮২ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একুশে পদক লাভ করেছেন।

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বরিশাল জেলার এর বাবুগঞ্জের বাহেরচরের ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল জব্বার খান পাকিস্তানের আইন পরিষদের স্পিকার ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে এম.এ. পাস করেন।

১৯৫৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ইংরেজিতে মাস্টার্স করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। ১৯৫৭ সালে অধ্যাপনা পেশা ছেড়ে তিনি যোগ দেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে। ১৯৮২ সালে তিনি সচিব হিসেবে অবসর নেন এবং রাষ্ট্রপতি এরশাদের সরকারে মন্ত্রীসভায় যোগ দেন। কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করে ১৯৮৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

পরবর্তী কালে ১৯৯২ সালে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থায়। ১৯৯৭ সালে তিনি একই সংস্থা থেকে পরিচালক হিসেবে অবসর নেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি ঢাকায় ফিরে একটি বেসরকারি সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবেও বেশ কয়েকদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।

সাহিত্যে অবদান

কাব্যের আঙ্গিক গঠনে এবং শব্দ যোজনার বিশিষ্ট কৌশল তার স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত করে। তিনি লোকজ ঐতিহ্যের ব্যবহার করে ছড়ার আঙ্গিকে কবিতা লিখেছেন। প্রকৃতির রূপ ও রঙের বিচিত্রিত ছবিগুলো তার কবিতাকে মাধুর্যমণ্ডিত করেছে।

তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো : কবিতা, সাত নরীর হার (১৯৫৫), কখনো রং কখনো সুর (১৯৭০), কমলের চোখ (১৯৭৪), আমি কিংবদন্তির কথা বলছি (১৯৮১), সহিষ্ণু প্রতীক্ষা (১৯৮২), প্রেমের কবিতা (১৯৮২), বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা (১৯৮৩), আমার সময় (১৯৮৭), নির্বাচিত কবিতা (১৯৯১), আমার সকল কথা (১৯৯৩), মসৃণ কৃষ্ণ গোলাপ প্রভৃতি।

পুরস্কার: বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯), একুশে পদক (১৯৮৫)৷

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ২০০১ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত