ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

পিংকি’র পিংকিমামা

  আলফি শাহরীন

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২২, ১৬:৪৫  
আপডেট :
 ২৪ জুলাই ২০২২, ১৭:০০

পিংকি’র পিংকিমামা

বর্তমানের আধুনিক যুগের তরুণ-তরুণীরা সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল। সোশ্যাল মিডিয়ার রয়েছে নানান রকম উপকারিতা এবং অপকারিতা। তবে বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার সহযোগিতায় ঘরে বসেই স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেকেই, বিশেষ করে নারীরা। তারা এই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে নিজের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এগিয়ে আসছে। করে তুলছে নিজেকে আত্মনির্ভরশীল। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে অনলনাইল ব্যবসার কাজে আবার কেউ কেউ নিজের পরিচয় গড়ে তুলছে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে।

পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলাতে এটি অনন্য সুযোগ। আর সেই সুযোগকে খুব ভালো ভাবেই কাজে লাগাচ্ছেন সাহসী তরুণী কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সাদিয়া আফরিন পিংকি। বাংলাদেশ জার্নালের কাছে পিংকি প্রকাশ করেন তার ভালোবাসার ‘পিংকিমামা’র পথচলার গল্প।

সাদিয়া আফরিন পিংকি। পড়াশোনা করছেন ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। পাশাপাশি নিজের পরিচয় তুলে ধরছেন একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে। পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু অনলাইন পেইজের সাথে ব্র্যান্ড প্রমোটোর হিসেবেও কাজ করে এতো অল্প বয়সেই নিজেকে করে তুলছে সাবলম্বী।

প্রফেশন হিসেবে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের পথই কেন বেঁছে নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে পিংকি বলেন, আমি খুবই হাসি খুশি এবং আড্ডা প্রিয় একজন মানুষ। যখনই আমি আমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই তখন আমার বন্ধুরা আমাকে একটা কথাই বলে যে আমি থাকলে আড্ডায় এক মজার আমেজ তৈরি হয়। কারণ আমি সবসময়ই আনন্দ করার মাধ্যমে আড্ডা জমিয়ে রাখার চেষ্টা করি। এতে করে সারাদিনের ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে যায়। সেজন্য আমার কিছু বন্ধুরা আমাকে উৎসাহ দিত সোশ্যাল মিডিয়াতে কন্টেন্ট তৈরি করার জন্য।

বন্ধুদের এই অনুপ্রেরণা খুব গুরুত্ব নিয়ে ভাবলেন পিংকি। যেহেতু বেশিরভাগ সময়ই পার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়াতে তাই সেই সময়টাকে যথাযথ কাজে লাগানোর কথা ভেবেই কন্টেন্ট তৈরি করার চিন্তা শুরু করেন পিংকি। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। ‘পিংকিমামা’ দিয়ে ফেইসবুক পেইজ খোলার মাধ্যমেই একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে পথচলা শুরু করেন পিংকি।

পিংকি বলেন, ওভারথিংকিং ইস্যু নিয়ে প্রথম একটি ভিডিও বানিয়ে আমার ‘পিংকিমামা’পেইজে শেয়ার করার পর খুব কম সময়ের মধ্যেই বেশ ভালো সারা পায় ভিডিওটি। সাথে সাথে হাওয়াই মিঠাই নিয়ে তৈরি করা আরও একটি ভিডিও আমার পেইজ থেকে ভালো রিচ হয়। কন্টেন্ট এর ইস্যু গুলো সোশ্যাল হওয়ায় মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে সাথে মিলে যায়। ফলে আমার কন্টেন্ট গুলো তারা বেশ আগ্রহ নিয়ে দেখতে পছন্দ করেন। সেইসাথে তারা উৎসাহ দেয় আমাকে আরও ইউনিক কিছু নিয়ে আসার জন্য। তাদের উৎসাহ আমার সাহস আরও দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।

মানুষকে হাসানোই একমাত্র লক্ষ্য পিংকির। পিংকি সবসময় চায় সবাই হাসিখুশি থাকুক। সারাদিনের ব্যস্ততা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের পর মানুষজন যখন আমার ভিডিও কন্টেন্ট দেখে একটু হাসে সেইটাই আমার একমাত্র স্বস্তি বলে জানান পিংকি। তাই কন্টেন তৈরি করার সময় পিংকির সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে মানুষকে হাসানোর। পাশাপাশি সমাজে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যেইসব ব্যাপার ঘটছে ,সেইসব গল্প গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন পিংকি।

খুব অল্প সময়ই এতো ভালো সারা পাবেন তা ভেবে উঠতে পারেননি পিংকি। ভেবে উঠতে পারেননি মানুষ তাকে এতো ভালো ভাবে গ্রহণ করবেন। এতে করে মানুষ যেমন তাকে আস্তে আস্তে চিনছে সেই সাথে মানুষের কাছে অনেক সারা এবং ভালোবাসা পাচ্ছেন পিংকি। যদিও খুব অল্পদিন হয়েছে ‘পিংকিমামা’র পথযাত্রা। তবুও অনেক অনলাইন বিজনেজ পেইজ ব্রান্ড প্রমোটার হিসেবে ‘পিংকিমামা’কে খুঁজে নিচ্ছেন নিজেদের ব্রান্ড প্রমোটের জন্য। এতে করে স্টুডেন্ট থাকা অবস্থাতেই পিংকি নিজেকে করে তুলছে সাবলম্বী। পিংকি মনে করেন সময় কাজে লাগানো উচিৎ এবং সোশ্যাল মিডিয়া একটা ভালো মাধ্যম নারীদের জন্য নিজেকে সাবলম্বী করে তোলার। পিংকি চান তার কাজের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে জেনো আরও নারীরা এগিয়ে আসুক এবং নিজের কর্মক্ষেত্র নিজেরা গড়ে তুলুক।

জীবনে সফল হওয়ার পথে আসবে নানান রকম বাঁধা। আর হাসি মুখে এসব বাধাকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই পিংকির লক্ষ্য। কিছু নেতিকথা ঠিকই শুনতে হয়েছিলো পিংকির। তবে সেগুলোকে উপেক্ষা করেই সামনে এগিয়ে গেছেন পিংকি।

একজন মেয়ে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কিছু সমস্যার সম্মুখীনও হতে হয়ে পিংকি কে। পিংকি বলেন বেশীরভাগ সময়ই কমেন্ট এবং মেসেজে সমানে মানুষের কাছে হ্যারেস এর শিকার হতে হয় তাকে। দৈহিক গড়ন ও চুল নিয়ে বেশিরভাগই কুটুক্তির শিকার হতে হয় তাকে।

শুধু তাই নয়, ‘পিংকিমামা’ পেয়েছে অনেক মানুষের ভালোবাসা। যা পিংকি কে শক্তি জুগিয়েছে এসমস্ত কুটুক্তির সাথে লড়াই করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।

বাংলাদেশ জার্নালকে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান পিংকি। পিংকি বলেন তার পেইজ ‘পিংকিমামা’র বয়স খুব কম। তবে তার ইচ্ছে ভবিষ্যতে সমাজে অন্যায় এবং অপরাধ গুলোকে ফানি ভাবে তার ভিডিও কন্টেন্টে উপস্থাপন করার মাধ্যমে মানুষের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলা। এছাড়া নারী সমাজকে সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা যোগানো অন্যতম লক্ষ্য ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএস/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত