ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

মওলানা ভাসানিকে পানিতে ডুবাতে চেয়েছিলেন ইয়াহিয়া খান

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২২, ১৯:৪২

মওলানা ভাসানিকে পানিতে ডুবাতে চেয়েছিলেন ইয়াহিয়া খান

১৯৬৯ সালের ১০ জুলাই প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ঢাকা সফরে এলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানি সেদিনই সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা পরস্পরের প্রতি মুগ্ধ ছিলেন বলে মনে হয়েছে। মওলানা সাহেব মন্তব্য করেন যে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান তিনবার তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কখনও তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার তোয়াক্কা করেননি (মওলানা ভাসানী আইয়ুব খানের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন)। এখন তিনি নিজের উদ্যোগে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছেন, কারণ তিনি তাঁকে পছন্দ করেন। তাদের বৈঠক দুই ঘন্টার বেশি স্থায়ী ছিল।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান প্রকাশ করেন যে বৈঠকে মওলানা ভাসানি তাঁকে পূর্ব পাকিস্তানের অসংখ্য সমস্যার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য তাঁর পরামর্শ চাওয়া হলে মওলানা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। ইয়াহিয়া খানের মতে মওলানা ভাসানি একজন বিক্ষোভকারী এবং কীভাবে পরিস্থিতিকে কাজে লাগানো যায় তিনি শুধু সেটুকু জানেন, সমাধান বের করা তাঁর কর্ম নয়। বিদায় নেওয়ার সময় মওলানা ভাসানি সকল বেয়ারার, চাপরাশি ও অন্যান্য অধঃস্তন কর্মচারিদের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং বলেন যে তারা সবাই তাঁর সৈনিক। তাঁকে তাঁর গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কাগমারি পৌঁছে দেওয়ার জন্য দুটি জিপের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রেসিডেন্টের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা গভর্নর’স হাউজের গাড়ি বারান্দা পর্যন্ত এসে মওলানা ভাসানিকে বিদায় জানান। জিপ চলতে শুরু করলে আমি মওলানাকে তাঁর সঙ্গীর কাছে নিচু কণ্ঠে বাংলায় বলতে শুনি, ‘আমার মনে হয়, আমি আহম্মকটাকে প্রভাবিত করতে পেরেছি।’

মওলানা ভাসানি বিদায় নেওয়ার কিছুক্ষণ পর নৌবাহিনীর একজন কমোডর আসেন নৌবাহিনীর কিছু প্রয়োজন নিয়ে আলোচনা করার জন্য। প্রেসিডেন্ট তাঁকে বলেন যে তিনি অবশ্যই তাঁর চাহিদা পূরণ করবেন, কিন্তু তা ছোট্ট একটি আনুকূল্যের বিনিময়ে। অফিসার হতচকিত হয়ে পড়েন। প্রেসিডেন্ট রসিকতার সুরে তাঁকে বলেন যে তাকে একটি কাজ করতে হবে এবং তা হলো, মওলানা ভাসানিকে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তুলে বঙ্গোপসাগরের গভীরতম পানিতে ডুবিয়ে দিতে হবে। (মেজর এস জি জিলানির ‘ফিফটিন গভর্নরস আই সার্ভড উইথ’ থেকে)

(আনোয়ার হোসাইন মঞ্জুর ফেসবুক থেকে। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও লেখক, নিউইয়র্ক প্রবাসী)

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত