ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইব্রাহিমের বদলে যাওয়ার গল্প

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২২, ১৭:২০  
আপডেট :
 ২৪ নভেম্বর ২০২২, ১৪:২৯

ইব্রাহিমের বদলে যাওয়ার গল্প

দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় আপনার মাসিক আয় কত ছিল? এমন প্রশ্ন শুনলে নিশ্চয়ই আপনি বলবেন, তখন তো ছাত্র ছিলাম। আয় করবো কীভাবে? তবে মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে এই প্রশ্ন করা হলে দীপ্ত কণ্ঠে উত্তর দেবেন, ‘আমার মাসিক আয় লক্ষাধিক’।

মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হননি ইব্রাহিম। পড়েন দশম শ্রেণিতে। বয়স কম হলে কী হবে, বড়দের মতোই কাজ করে চলেছেন তিনি। করেছেন রাত জেগে পরিশ্রম। শত বাঁধা এলেও দমাতে পারেনি তাকে। এমনকি অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে এই কিশোর ফ্রিল্যান্সার।

অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে আয় করার একটি পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং। এর মাধ্যমে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়। তবে ইব্রাহিমের মতো এত কম বয়সে সফলতার দেখা পেয়েছে কম জনই। এই কিশোরের জন্ম সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা গ্রামে। বর্তমানে তিনি নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ছেন।

ফ্রিল্যান্সার হওয়ার শুরুর গল্প শুনতে চাইলে তরুণ এই ফ্রিল্যান্সার বলেন, ‘ছোট থেকেই আমার প্রযুক্তির প্রতি ঝোঁক ছিল। করোনার মধ্যে যখন আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি, তখন থেকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু। আমি দেখতাম, আমার আব্বু-আম্মু আমার জন্য অনেক কষ্ট করছে। মনে হতো, আমিও যদি কিছু একটা করতে পারতাম! তখন আব্বুকে জানাই। তারপর কয়েকজন বড় ভাইদের সহযোগিতা নিয়ে শুরু করেছি ফ্রিল্যান্সিং।

কম্পিউটার কিনতে কিস্তিতে নেওয়া মাত্র ৪০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেছিলেন তার ফ্রিল্যান্সিং। শুরুর ৩ মাস পর থেকে আয় করার সুযোগ পায় ইব্রাহিম। তার বর্তমান মাসিক আয় লক্ষাধিক। তবে তিনি জানান, কাজের ওপর নির্ভর করে টাকার পরিমাণ।

তিনি আরও জানান, কখনো এমন হয়েছে যে রাতজেগে পরিশ্রম করতে হতো। আবার কখনো চোখ থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। যাত্রাপথে তার মায়ের সহযোগিতা ছিল বেশি। তাছাড়া তার বাবা তাকে উৎসাহিত করেছে। পরিবার থেকে কখনো কোনো বাঁধা আসেনি।

পড়াশোনা আর ফ্রিল্যান্সিং দুটো একসঙ্গে কীভাবে সামলান? এমন প্রশ্নের জবাবে কিশোর এই ফ্রিল্যান্সার বলেন– ‘দুটো একসঙ্গে সামলানো কঠিন ব্যাপার। তবে চাপ কমিয়ে এনিছি। এখন খুব বেশি রাত জাগি না। এজন্য তেমন সমস্যা হয় না।’

কখনো থেমে যাবেন এমন মনে হয়েছে? ইব্রাহিম জানালেন, ‘অনেক সময় বিভিন্ন কারণে মনে হয় থেমে যাবো। হতাশ হতাম। ওই সময় ভাবতাম, আমাকে থেমে গেলে হবে না। লেগে থাকতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, ধৈর্য থাকতে হবে। তাহলে সফল হতে পারব।’

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়ে কিশোর ফ্রিল্যান্সার ইব্রাহিম বলেন, ‘ধৈর্য, ডেডিকেশন যদি না থাকে তাহলে এই সেক্টরে ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। এজন্য ধৈর্য থাকতে হবে এবং লেগে থাকতে হবে।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ইব্রাহিম জানান, দেশের বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে কাজ করতে চান তিনি। নিজের একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে চান। যেন বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন। নিজে কাজ ঠিকমতো শিখে, ভবিষ্যতে অন্যদের শেখানোর স্বপ্ন দেখেন এই কিশোর।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত