ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

রমজানের বিধিবিধান: করণীয় ও বর্জনীয়

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩, ২০:২৫

রমজানের বিধিবিধান: করণীয় ও বর্জনীয়
ছবি: সংগৃহীত

রমজানের পরিপূর্ণ সুফল পেতে চাই সম্পূর্ণ প্রস্তুতি ও পরিপূর্ণ আমল। রমজান ও রোজার নিয়ম–কানুন ও মাসআলা–মাসায়েল ভালোভাবে জেনে আমল করলেই রমজানের শিক্ষা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাসিল হবে। তা না হলে রোজা উপবাস ভিন্ন আর কিছুই নয়।

রমজানের ফরজ:

রমজান মাসের ফরজ আমল হলো একটি; এক মাস রোজা পালন করা। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূববর্তীদের ওপর; যাতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো’ (সুরা বাকারা)। প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, শারীরিকভাবে রোজা পালনে সক্ষম মুসলমানের প্রতি রোজা ফরজ।

রমজানের ওয়াজিবসমূহ: রমজানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওয়াজিব দুটি, যথা: সদকাতুল ফিতর আদায় করা ও ঈদের সালাত পড়া। ঈদের দিন সকালে যিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বা অধিকারী থাকবেন তিনি তার নিজের ও পরিবারের সকল সদস্যদের ফিতরা আদায় করবেন। যদি কেউ নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নাও থাকেন তবুও সুন্নত বা নফল হিসেবে হলেও সদকাতুল ফিতর প্রদান করা উত্তম। সাহাবি হজরত আবুসাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসুল (স.) এর জমানায় আমরা ঈদের দিনে এক সা পরিমাণ খাদ্য পণ্য সদকাতুল ফিতর হিসেবে প্রদান করতাম। তিনি আরও বলেন, তখন আমাদের খাদ্যপণ্য ছিল যব, কিশমিশ, পনির ও খেজুর (বুখারি শরিফ)।

রমজানের সুন্নতসমূহ: রমজান মাসে বিশেষ কিছু সুন্নত রয়েছে, যথা: বিশ রাকাত তারাবিহ সালাত আদায় করা, সেহরি খাওয়া, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, ইফতার করা ও করানো, কোরআন করিম বেশি বেশি তিলাওয়াত করা এবং শেষ দশ দিন ইতিকাফ করা। শেষ দশ দিনে বেজোড় রাতগুলোয় শবে কদর তালাশ করা এবং এই দোয়া পড়া—‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নী’, অর্থ—হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করা পছন্দ করেন, সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন, (তিরমিজি, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)।

বিশেষ নফল আমলসমূহ: রমজানে প্রতিটি ইবাদতের বিনিময় সত্তরগুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। একটি নফল পালন করলে একটি ফরজ পালন করার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই রমজান মাসে নফল ইবাদত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাসের বিশেষ নফল আমলসমূহ হলো: কোরআন মাজিদ একাধিকবার খতম বা পূর্ণ পাঠ করা; কালিমা তৈয়্যবা বেশি বেশি পাঠ করা; দরুদ শরিফ বেশি বেশি পাঠ করা; তওবা ও ইস্তিগফার করতে থাকা; সর্বদা তসবি তাহলীল ও জিকির করতে থাকা; দীনী শিক্ষা ও দীনী দাওয়াতি কাজে মশগুল থাকা; ধর্মীয় বই-পুস্তক, তাফসির, হাদিস, ফিকাহ ও ইসলামি সাহিত্য পড়া ও অন্যকে পড়তে সাহায্য করা; দীনী মজলিশ ও মাহফিল আয়োজন করা; অধীনস্থ কর্মচারী ও শ্রমিকদের কাজের চাপ কমিয়ে দেওয়া এবং তাদের পূর্ণ মজুরি ও অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান করা; বেশি বেশি দান খয়রাত করা; ইহসান তথা সদা আল্লাহর অস্তিত্বের উপস্থিতির ধ্যান করা ও আল্লাহর সঙ্গ বাস্তবে অনুভব করা অথবা আল্লাহর সার্বক্ষণিক নজরদারির চেতনা মনে জাগ্রত রাখা। (বুখারি: ৪৮)।

রমজানে পবিত্রতা রক্ষা করা; সকল প্রকার অন্যায় অবিচার জুলুম অশ্লীলতা ও পাপাচার থেকে দূরে থাকা ও অন্যদেরও দূরে রাখা; কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার না করা; সবার সঙ্গে ক্ষমা ও দয়ার আচরণ করা; আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়া ও তাঁদের সাহায্য সহযোগিতা করা; গরিব আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সেহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করা; মা–বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানদের সামর্থ্য মতো নতুন জামা কাপড় ও বিভিন্ন উপহার উপঢৌকন দেওয়া রমজানের অতীব গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মাহাত্ম্যপূর্ণ ইবাদত।

বাংলাদেশে জার্নাল/কেএ/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত