ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর গাজীপুরের শাহীন

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩, ১৯:১৭

উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর গাজীপুরের শাহীন
শাহীন আহমেদ। ছবি: প্রতিনিধি

প্রযুক্তির যুগে নিজেকে বদলে ফেলার এক অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং সোশ্যাল মিডিয়া। অনেক তরুণরা এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন উদ্যোক্তা, উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা। এমন একজন তরুণ উদ্যোক্তা হলেন গাজীপুরের শাহীন আহমেদ (২৪)।

শাহীন আহমেদ গাজীপুর মহানগরীর টেকনগপাড়ার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষার্থী।

চাকরি করব না, চাকুরি দেবো এই স্লোগান ধারণ করে ওই তরুণ ২০২০ সালে করোনা কালীন সময়ে অনলাইন মাধ্যমে ঘরে বসেই হোলসেলের ব্যবস্যা শুরু করেন। এরপর মেয়েদের কসমেটিক, ঘড়ি, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগের হোলসেল ব্যবসা শুরু করেন। তিনি yourc নামে একটি ফেসবুক পেইজ খুলে ব্যবসার পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির চেষ্টা করেন। কিছুদিনের মধ্যে সারাদেশের শতাধিক শিক্ষার্থী তার সাথে যুক্ত হয়ে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় ৩ হাজারের বেশি গ্রাহক পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন। এদেরকে অনলাইনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা, বিক্রির ব্যবস্থা করা এবং উদ্যোক্তাকে পরবর্তী ধাপে পৌঁছে দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

গত দুই বছর থেকে শাহীন আহমেদের yourc পেজ থেকে পণ্য কিনে আসছেন বগুড়ার সেজুতি নাফিসা। তিনি বলেন, আমি তার কাছ থেকে পন্য নিয়ে আবার নিজে বিক্রি করি। এতে আমার নিজস্ব অনেক গ্রাহক তৈরি হয়েছে। পণ্য অর্ডার করলে শহীন পাঠাও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গাজীপুর থেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। এক্ষেত্রে অর্ধেক টাকা আগে পরিশোধ করতে হয়।

ঢাকার কাঠাল বাগান এলাকার ডা: উম্মে কুলসুম আফসানা বলেন, আমার নিজের একটা পেজ আছে সেটার মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করি। আমি দীর্ঘদিন ধরে এই পেজ থেকে পন্য কিনে ব্যবসা করছি। তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও পেজে পন্যের দাম ও ছবি দেয়। পরে আমরা সেটা দেখে অর্ডার করি। প্রথম অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করি, পণ্য হাতে পাওয়ার পর পুরো টাকাটা পরিশোধ করি।

উদ্যোক্তা শাহীন আহমেদ বলেন, আমার স্বপ্ন উদ্যোক্তা তৈরি করা এবং নিজেকেও একজন সফল উদ্যোক্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশে বর্তমান বেকারত্ব বেড়েই চলছে। আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি কিছু মানুষের আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয় সেটিই আমার কাছে চরম পাওয়া। অনেক শিক্ষার্থীর ব্যবসা করার ইচ্ছে আছে কিন্তু অর্থ নেই, আমি প্রাথমিকভাবে তাদের বিনা পুঁজিতে পন্য সরবরাহ করেছি। পরে তারা ব্যবসা করে পন্যের অর্থ ফেরত দিয়েছে। এখন তারা অনেকেই প্রতিমাসে মাসে ঘরে বসেই ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছেন।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), গাজীপুরের উপ-ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম জানান, আমরা এ ধরনের উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদান করে থাকি। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের বিসিকে নিবন্ধন করতে হবে। এখন ঘরে বসেই অনলাইনে নিবন্ধন করা হয়।

শাহীনের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমাদের সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ হয়নি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার পণ্যের উদ্যোক্তা তৈরিতে আমরাও সহযোগিতা করতে পারি। ডিজিটাল যুগে এ ধরণের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা উদ্যোক্তাদের পণ্য তৈরিতে কাচামাল ও যন্ত্র/মেশিনারিজ আমদানী করতেও সুপারিশ করে থাকি। আর তাদের উৎপাদিত পণ্য সাব-কন্ট্রাকে বিক্রিতেও আমরা সহযোগিত করি। এ ব্যাপারে শহীনকে আমরা সর্বাত্মত সাহায্য করবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত