ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা, আদালতে শামসুজ্জামান

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩, ১০:২৩  
আপডেট :
 ৩০ মার্চ ২০২৩, ১২:৫১

প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা, আদালতে শামসুজ্জামান
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস । ছবি: সংগৃহীত

দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানীর তেজগাঁও থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার প্র‍থম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে ঢাকার সিএমএম আদালতে নেয়া হয়েছে। এদিকে পুলিশ শামসুজ্জামানের রিমান্ড চাইবে না বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় শামসুজ্জামানকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নেয়া হয়। বর্তমানে তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।

এর আগে উদ্দেশ্যমূলক নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের দায়ে দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, বুধবার (২৯ মার্চ) রাত ১১টা ১০ মিনিটে মামলাটি দায়ের করা হয়। আইনজীবী আব্দুল মালেক (মশিউর মালেক) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। তিনি মামলায় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ আনেন।

মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

এর আগে একই অভিযোগে তেজগাঁও থানার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে।

মামলার এজহারের বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একই সঙ্গে ঐ সংবাদটি দৈনিক প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা। সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এ ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের সোনালী গৌরবউজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে জনগণসহ বহিঃবিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মহান স্বাধীনতা দিবসের/দিনে এ সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

কিন্তু পরবর্তীতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে বিষয়টি নিয়ে সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। নাম পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পত্রিকায় বলা হয় শিশুটির নাম জাকির হোসেন, কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় ঐ শিশুর নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ী সাভার থানাধীন কুরগাঁও পাড়ায় তার বাবা একজন পেশায় রাজমিস্ত্রি, মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সন্তান সবুজ। প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝে মাঝে ফুল বিক্রি করে। শামসুজ্জামান (৩৭) এর প্রস্তুতকৃত প্রথম আলোর সংবাদে বলা হয়েছে, পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইল এর স্বাধীনতা লাগব' প্রকৃতপক্ষে ঐ শিশুটি এ ধরনের কোনো কথা বলেনি। শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয় স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তী সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এ মিথ্যা সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাদী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত