ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্রিটিশ পেরিয়ে বাংলাদেশ

  রাজীব কুমার দাশ

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩, ১৮:০৫  
আপডেট :
 ২৭ মে ২০২৩, ১৮:০৮

ব্রিটিশ পেরিয়ে বাংলাদেশ
লেখক: রাজীব কুমার দাশ। ফাইল ছবি

পুলিশ- সেই হতে এই এক আজব গজব প্রাণী। পুলিশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য, আশা জাগানিয়া পুলিশিং পরিধির সন্তুষ্টি, বণিকের মানদণ্ডে ভর করে রাজদণ্ডেও ক্যারিশমাটিক পুলিশিং ঘোড়ায় চেপে চলা ব্রিটিশ সামন্ত প্রভুদের টেনে নেয়া সফল মনোরথের স্হায়ী একটি ঠিকানা -পুলিশ উপহার দিতে পেরেছে।

সফল পুলিশিং -পেনালকোড, সিআরপিসি, সাক্ষ্য আইন, পিআরবি, ডিএসবি ম্যানুয়ালসহ বহুমুখী বিধি আদেশ আবর্তন-নিবর্তন জগাখিচুড়ি সংমিশ্রনের সুক্ষ্ণ সন্তর্পণে প্রকাশ পেলেও এই দুর্ভাগা উপমহাদেশের বর্ণশংকর আদমগুলো শেষমেশ নিজেদের মাঝে বিশ্রীভাবে গুঁতোগুঁতি করে মরবেন; - ইংরেজ সামন্তপ্রভুরা তা আগেভাগেই ভালোমতোন জানতেন।

পুলিশের লাঠি নীলক্ষেত পেরিয়ে বন্দুক রাইফেল জালিয়ানওয়ালাবাগ চোখ তাতিয়ে দ্বিজাতিতত্ত্ব দেশভাগ হয়ে বাংলাদেশে থিতু হলো। সেই যে ব্রিটিশ গেল, পাকিস্তানও চলে গেল। ইংরেজ স্তাবক সামন্ত প্রভুত্ববাদ রয়ে গেল। সপরিবারে জাতির জনককে হত্যা করে উত্তরসুরীদের পলাশীর আম্রবাগানের শিক্ষা নিতে বললেন। চোখের সামনে নতুন ডিজিটাল স্তাবক সামন্তপ্রথা পুলিশিং চালু হয়ে গেল। সেলফি ক্ষমতায় চলছে -যে যার মতোন। নীতিতে নিজে বাঁচলে আগে বাপের নাম। পুলিশের সততা নিয়ে মুষ্টিমেয় কেউ কেউ প্রকাশ্যে স্বীকার করলেও সিংহভাগই আদম হাওয়া সন্তান পুলিশের আচরণে বীতশ্রদ্ধ। সামনে মনে মনে ষাঁড়ের বাচ্চা স্যার বললেও পেছনে সযতনে ভেংচি কেটে গালাগালি করেন। তাহলে সিংহভাগ পুলিশই কী সুবিধাবাদী কালাচাঁন?

এই দেশের সুবিধাবাদী সুবোধপুত্রদের চেনা দায়। যেখানে যেমন-সেখানে তেমন হাতে পায়ে ধরাধরি পথচলা। বিনিময়ে নির্ভেজাল তাপানুকুল আমুদে মেতে ওঠা মিশ্র জনমিতি সংস্কৃতি নিয়ে পথচলা। পুলিশের কী এত এত ক্ষমতা!? দিনকে রাত রাতকে দিন করতে পারেন? বিস্তর অভিজ্ঞতা বলেন- ব্র্রিটিশ পাকিস্তান পেরিয়েও পুলিশকে যে যাঁর প্রয়োজনে ব্যবহার করেছেন। বিনিময়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিস্তর সুবিধাভোগীদের মতোন- সেই হতে এই পুলিশের হাতেগোনা ক'জন ছাড়া পুলিশের বৃহৎ অংশ চেটেপুটে মহার্ঘ ঝোল আলু খেয়ে সন্তুষ্ট থেকেছেন।

দিন-রাত শেষে পুলিশ নিজেদের, ‘মাছের রাজা ইলিশ, স্বামীর রাজা পুলিশ, ভাবার কারণ নাই। সবই কথার কথা। পুলিশ নিজেকে সন্তুষ্টির বরপুত্র ভাবারও অবকাশ নাই।

স্বার্থের মগডালে বসে দিনশেষে বৃটিশ সাদা স্যার হয়ে বাংলার কালা স্যার বড়ভাই মেঝ সেঝ ভাইটিও পুলিশের পিঠে চড়ক বড়শি গেঁথে ছেড়ে দিয়ে ভাবেন, পুলিশ তুমি যতই মারো, মাইনে তোমার এক শ বারো। স্বার্থের হেরফের হলে গগনবিদারী চিৎকার মিছিলে গলা ফাটিয়ে বলেন, পুলিশের চামড়া তুলে নিবো আমরা। পুলিশের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে দেন নির্ভেজাল বয়ান।

তারপরেও পুলিশ খায় দায় জাবরকাটা গরুর মতো ঘুমায়। তীব্র অপমানেও পুলিশের ভ্রুক্ষেপ নাই। পুলিশের বাচ্চাদের বউ শালি সহপাঠী খেপায়। খেলার মাঠেও পুলিশের বাচ্চাগুলো অসহায় মনে তাকিয়ে রয়।

১৩ মে ২০২৩

লেখক: প্রাবন্ধিক ও কবি, পুলিশ পরিদর্শক,বাংলাদেশ পুলিশ। মেইল[email protected].

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত