ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘ভুতের পোলা নাক কাটা খবিস’

  মোস্তফা কামাল পাশা

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৪৪

‘ভুতের পোলা নাক কাটা খবিস’

সদ্য বিদায়ী একুশের বইমেলা করোনা থাবায় ভূশয্যায়! অবিশ্বাস্য কাণ্ড বটে, তবুও রমরমা ব্যবসা করেছে উপরের শিরোনামের বইটি। পাঠক গফাগফ গিলেছে। দ্রুত গিলতে গিয়ে কারো কারো গলার মাঝখানে আটকেও গেছে। ছুটতে হয়েছে বৈদ্যের কাছে। জানাশোনা এক বৈদ্যের নাম আলহাজ্ব ড. মোঃ ইব্রাহিম এম বি এইচ এস (বাঙ্গালোর)। অজানা কারণে তিনি ডা. না লিখে ড.ই লিখেছেন ঢাউস সাইনবোর্ডে! খাস কথা হচ্ছে, তিনি বেঙ্গালুরু থেকে ডিগ্রি নাকি ডক্টরেট নিয়ে ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত আছেন। তাই কেউ বৈদ্য বললে বেজায় ক্ষেপে যান। যাবেনইতো, যাবেন না কেন! এত দূরদেশ থেকে ডিগ্রি থুড়ি ডক্টরেট হাছিল করেছেন, বেচারার কষ্ট হয়নি বুঝি! কতো কতো কষ্ট হয়েছে! তাহলে কেন তাকে ডক্টর না বলে বৈদ্য ডেকে অপমান করা হবে! কোনভাবেই এটা মানা যায় না!

ড. ইব্রাহিম সাহেব গণপ্রতিনিধিও বটেক! ক্ষমতা-প্রভাবও সিন্ধুক ভর্তি তার! তবুও একবার কৌতুহলের চুলকানি থামাতে তার কাছে জানতে চাই, ‘এম বি এইচ এস’ এর পুরোটা কী হবে? ড. সাহেব চোখজোড়া কোয়েল পাখির আন্ডা বানিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টির লেজার বিম দিয়ে খানিক আমাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেন! বিটলামির কোন লক্ষণ না দেখে ধিক্কার ঝাড়েন মাত্র একশব্দে, ‘গাধা’! তারপর দাঁতে মোটা খিলালের কয়েকটা গুতো দিয়ে রক্ত বের করে ফের বলেন, ‘ভার্সিটিতে কী শিখেছ? এটা হবে- ব্যচেলর অব মেডিসিন ইন হোমিও সার্ভিস।’

এ রকম কোনো বস্তুর কথা জানা ছিল না! তাছাড়া ডিগ্রিতে ডা. হলেও ড. হয় না। কিন্তু ড. ইব্রাহিম সাহেবকে বেশি ঘাটানোর হিম্মত মজুদে নেই। বরং ফেরা যাক, আধামরা বইমেলার বেষ্ট সেলার, ‘ভুতের পোলা নাক কাটা খবিস’ প্রসঙ্গে।

জনাব, বেয়াদবি না নিলে একটা নিবেদন রাখতে পারি। তা হচ্ছে, বইটা এই অধম রচনা করেছে। অবশ্য ছদ্মনামে। নিজের নামে লিখলে জনাব, আপনারা এক কপিও কিনতেন না। তাই প্রকাশক সাহেব কূট কৌশলটা নিজেই আবিষ্কার করেন! বইটা মাত্তর ২৫ সংস্করণ ছাপা হয়েছে। বিক্রি হয়েছে প্রকাশকের হিসেবে ৪৫ হাজার কপি। আসল হিসাব অনেক বেশি। ভাবছেন, লাভে লাভে ছয়লাপ আমি! না জনাব, ওরকম কিছু না। প্রকাশক সাহেব সব লিখে নিয়ে আগেই কাজ বুঝে নিয়েছেন! ব্যবসায়ী বলে কথা!

তো, ‘ভুতের পোলা নাক কাটা খবিস’র সাথে কোনো আউলিয়া, কেরাম বা পিরের নামের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। নামের আগে-শেষে লম্বা লেজুড়ধারী আমাদের মহান ওলামা-মশায়েক ছাহেবানদের তৈরি সার্চ কমিটি! এটাই হচ্ছে খাস লাভ। কারণ ধরা খেলে প্রকাশক বেটা মূল স্ক্রিপ্ট দেখিয়ে গোলা-বারুদের জেহাদী হোস পাইপের নল আমার দিকে ঘুরিয়ে দিত। আজকে এ পর্যন্ত জনাব। মনে খুব পেরেশানি ঘাটি গেড়েছে। বাকিটা আল্লাহ পাক রহম করলে সামনের কোনো এক শুভদিনে বলার ইচ্ছে আছে। টা টা, বায় বায়। করোনা খবিসকেও!

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • পঠিত