ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

জয়নাব শান্তু’র তিনটি কবিতা

  শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২১, ২১:৪৪

জয়নাব শান্তু’র তিনটি কবিতা

(যুদ্ধদিনের কথা)

সহজ ঘটনা ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল স্বাভাবিক নিয়মেই।

রোদের বেলায় দিগম্বর বসে থেকে

ঘুমের রেশে নিধন হয়েছে সোনালী পিঁপড়েরা।

গ্রন্থাগারের হলুদ কোণায় খয়েরী প্রজাপতি মৌন,

অথবা স্মৃতিময় ক্যালেনডোলার ক্যানভাস।

একদিন প্রাচীন একটা জলাভূমির মধ্যখানে

হারিয়ে গিয়েছিল আমাদেরও গ্রাম;

যখন কামান-বন্দুক নিয়ে মহড়া দিতে দিতে

বিলম্বিত হিসেবের হোলে,

দেশত্যাগের সুরেলা কান্না

হয়তো অতীতের দিকেই নিয়ে যেত আমাদের।

এখানে কেউ এসে মাটির অংশ হয়,

কেউ হয় ইতিহাসের।

এক নিভৃত কৃত্যানুষ্ঠানের ফাঁকে

সৃষ্টির জ্বলন্ত প্রতিবিম্বের বেশে ওরা আসে।

এমনই বিশিষ্টতা সেই নৈঃশব্দ্যের!

আর সেদিন ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড়িয়েও

সান্ত্বনাহীন শোক আর করুণার উত্তপ্ত কয়লা-

বিস্মৃত বিকেলের পোড়াকাঠামোয় খুঁজে চলে

অরণ্যে ক্লান্ত অভিযাত্রীর অভিমান।

থেকে যায় এক রহস্যময় প্রতিষেধক,

রক্তাক্ত কার্নিভাল,

দুঃস্বপ্নহীন স্বপ্ন,

অনিঃশেষ স্নান।

আর যা কিছু ঐহিক,

শিশুর মতো ছুটে আসা সমুদ্রের ঢেউ।

(শীতল সিনাই)

এইখানে জানি প্রতি সময়েই থেমে গেছে শীতল সিনাই

জন্ম-স্বভাব ঘিরে থাকে যেভাবে পতনের দায়ে,

রাজন্যের ও ক'ফোঁটা অশ্রু, অতৃপ্ত, ভীত বিরোধী

জনদাবির স্রোতেই একদিন ভুলে যাও মক্ষিকা,

নিশ্চুপ, বিদীর্ণ হও।

এখানে থাকবে কেবল অনাদৃত পাপের দ্রাবিড় রেখা।

অলৌকিক প্রহরীর দল

নিমেষেই সময়ের নীড়ে

লিখে যাবে - ভবিতব্য প্রহর,

পার্থ, যার দিগন্ত চক্র

আগামীর খোলসে জমেছে সেভাবেই বিস্ময় আরো।

(বিরোধ)

তারা আমাকে বিরোধী বলে।

নিমেষের চোখ, জাদীর সূর্যোদয়,

ধমনীতে টেনে চলে সুরঙ্গের সুর

দূরে অথচ অন্তর্ঘাতে, বন্দীর সংগ্রামে

আত্মদানের সঠিক সংজ্ঞা জানা হয়নি তখনো।

এখনও যখন যাও রোবেনের খোঁজে,

সুযোগে ভাজো নিঃশেষে,

নিরাবয়ব আমি বুঝি কেবল কড়াহীন নৈরাত্মা।

শিশির ঝরে যায় সারা রাতে, নিরবচ্ছিন্ন প্রহরে

ভোরের ভেজা ভয়, নিরীহ মাটি,

এইখানে শব জমে; দূর নগর বিষণ্ণতা ছড়ায়।

আমি দাবি করি বিশ্বস্ততা, নির্বিবাদ বিচারে।

আমি জন্ম দিয়ে চলি আজন্ম

বহুর ভেতরে এক মানুষ, উচ্ছেদের সংসারে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত