আজগর আলীর তিনটি কবিতা
শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:০২
।। জলের নিতম্বে ।।
আমার বোধের ভেতরে জন্ম নেওয়া এক
রাজহাঁস
শশ্রুষাভাবে চিৎকার করে ভুল আওয়াজে...
লু-হাওয়ায় মিলিয়ে যায় বোধহীন পাখোয়াজ...
বিপন্ন সেতারের কারুকাজে লাজে মরে সংখ্যাহীন সরোদ
আহারে প্রদোষকাল
ধুম্রজালে হারালে নিজের নাম...
দূর লাবলুসে ভেসে ওঠে বেঢপ সুর বদনাম
কাঁদে বৃক্ষের বল্লরী... কাঁদে দেহের সব ভাঁজ
সহসা ঘূর্ণিবায়ু আচড়ে পড়ে নিসর্গের জানালায়
তুমুল ঝঞ্জায় কেঁপে ওঠে হাওয়ার কবাটগুলো
আর অসীম রিরংসায় উড়তে থাকে প্রাচীন পাতক...
এদিকে
দশদিকে গজিয়ে উঠে বিস্তর হলুদ ঘাস...
লতায় লতায় খচিত আজ আত্মহননের ইতিকথা
কোথায় সে সব মীনরাজ
ক্ষীণ ঝড় এলেও যারা আশ্রয় খোঁজে নিজস্ব জলের নিতম্বে...
।। সুরা কাফিরুন ।।
সমস্ত শিশির ফেটে যাচ্ছে কারও পদাঘাতে
অপঘাতে প্রাণ হারিয়েছে কুয়াশার বন
আর
কোথাও হিফজখানার ছাদে কাঁপছে
ক্ষুধাতুর এক কাক...
নির্ভয়ে কেউ ঢুকে পড়েছে
হুজুরের চোখে সুরমার ভেতরে দিয়ে ধূলা...
বেলুন ফুলিয়ে কেউ ফাটিয়ে দিচ্ছে সময়
আর অস্তমিত সূর্যের মত
বটনিতে লেপ্টে আছে কেউবা...
খুৎবার দোয়া তবু সহজ
সুরা কাফিরুন!
নাম শুনলেই সফাং করে
লাফিয়ে ওঠে; ইয়াসিন হুজুরের হাতে শুকানো বেতগাছ
।। একটা পাখি ।।
হাওয়া ও তার
অদৃশ্য বল্কলে
বিমর্ষ এক
রাতের কীর্তিনাশা
হৃদয় তলে
জ্বলছে যে হামেশা
একটা তারা
একা দূরে জ্বলে
আশংকা ও
আকাঙ্ক্ষাতে তারা
ছড়িয়ে গেলো
অদৃশ্য স্ফীতি
ঝুলিয়ে দিয়ে
পুরাকালের ভীতি
কাটিয়ে দেয় কে
যুগের পরম্পরা
একটা পাখি
গানের কথা ভুলে
হারিয়ে গিয়ে
বিবর্ণ এস্রাজে
মুষড়ে পড়ে
হিমেল গন্ধরাজে
ছন্নছাড়া আনকোরা
সুর তুলে
একটা পাখি
অচিন অন্ত্যমিলে
হারিয়ে গেছে
দুর্ভাবনার ঝিলে—
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে