ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

মধুবন চক্রবর্তীর তিনটি কবিতা

  শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:০১

মধুবন চক্রবর্তীর তিনটি কবিতা
মধুবন চক্রবর্তী

।। পাখিটা যখন মেয়ে হয়ে উঠল ।।

মেয়েটা উড়ছিল। উড়তে উড়তে সত্যি সে পাখি হয়ে গেল। একদিন ট্রাফিক জ্যামে আটকে গেল তার পাখনা। উঠতি বয়স। আকাশের দিকে বুক পাততেই যুদ্ধবিমান রুখে দিল পথ। মাটির শুন্যতা থেকে অনেকগুলো বায়বীয় স্তর পেরিয়ে জ্যামের অন্তর্জালে জড়িয়ে গেল তার শাড়ি। পিসিমা দু খিলি পান মুখে পুড়ে তাকালেন বিষ্ময়ে। আসলে জর্দা রঙের নেশা ছিল মেয়েটার চোখে। পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইত দ্বিধাহীন সমুদ্র। ঢেউয়ের পর ঢেউ তারপর ট্রাফিক পুলিশের সার্চলাইট, চোখ এড়িয়ে আটলান্টিক পাড়ি দিতে চেয়েছিল মেয়েটা। একদিন কাকভেজা বাড়ির কার্নিশে দাঁড়াতেই পিসিমা বললেন, কি কেচ্ছা! ডানাটা এবার কাটো। বাবা নকশা করা একটা খাঁচা আনলেন। যার অলঙ্কৃত দরজা শুধু ভেতরে ঢোকার। দেখতে দেখতে পাখিটা একদিন মেয়ে হয়ে উঠলো।

।। বাঁশী ।।

কৃষ্ণপুরের অগ্নি বাঁশি বাজায়। বাঁশি বাজালেই কি সবাই কৃষ্ণ হয়ে ওঠে, রাধা এসে বসে পাশে চুপটি করে? একদিন অগ্নির সাথে দেখা হলো বিরহের। এবং বিরহের হাত ধরে জুটলো রাধার মতো কেউ একজন। কৃষ্ণের মতো দেখতে না হলেও এরপর আড়ালে আবডালে কেউ কেউ অগ্নিকে কলির কেষ্ট বলা শুরু করলো। তারপর বহুদিন দেখা অদেখার আবডালে ‘বিরহের মতো রাধা’ আর ‘বাঁশির মত কৃষ্ণের’ ধরলো ফুলফল। জ্বললো আগুন। পুড়ল দেহ। তাপ উত্তাপের আলো আঁধারিতে একদিন অগ্নি বুঝলো আগুন গলে জল হয়ে গেছে। বাঁশিতে বেজে উঠছে পদাবলী আর বিরহ জমে পাথর।

।। মধ্যরাতে দুঃস্বপ্ন ।।

গোপন দরজার চৌকাঠ ছাড়িয়ে কিছুটা দূরে স্বপ্নের বাড়ি। অলকানন্দার শান্ত স্নিগ্ধ স্রোতে শরীর ভাসিয়ে মাঝেমধ্যে যাওয়া হতো তার চিলেকোঠায়। সেই মধ্যরোদ্দুর থেকে সন্ধ্যাস্নাত চাঁদ চোখে মেখে জোনাকির রিংটোন শুনতে শুনতে আবার বাড়ি ফেরা। কোনোদিন নিদ্রার অতলে দেখা হতো। স্বপ্নের আলিঙ্গনে চুম্বনে জেগে ওঠা, সে কি দারুণ ফাগুন!

স্বপ্ন আসতে চায় আজও;

শ্যাওলা ধরা দালানের বিষাদময় দুপুর পেরিয়ে, মৎস্যাগারে মৃত মাছেদের হাতছানি এড়িয়ে, বিপদজনক সাঁকো ছাড়িয়ে, রাত্রি নিবিড় নাভির মতো অপেক্ষমান সদরের কাছে। দুঃস্বপ্নের পানিপথে কিভাবে যেনো আরও কলুষিত হলো আমার ইলিশ স্বপ্নগুলো।

সিঙ্গাপুরের উড়ালআসন একপ্রকার নিশ্চিত অথচ মাঝরাতে এলো দুঃস্বপ্নের অফিসিয়াল চিঠি। এখন তার সাথেই আমার গরল চন্দ্রিমা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত