দীপিতা চ্যাটার্জী এর তিনটি কবিতা
শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০২:১২ আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ২২:০২
।। বিরত ।।
আজ এক মাস্তুল জ্বালানোর পরিকল্পনায় উদ্দেশ্যহীন হেটে চলেছি নদীর দিকে
পাড়ে বাঁধা নোঙ্গর নিষ্পাপ, আগন্তুকের অপেক্ষায় বৈঠা
ঝলসানো রোদ্দুর কে দুপুর নামে ডেকে উঠলো নির্জনতা
দূরের শিমুল গাছে অসংখ্য শকুনের দল
প্রথম টায় ভেবেছিলাম বিশ্রামরত কিন্তু পরে গাছের নিচে নজর যেতেই লক্ষ করলাম
তারা হিংস্রতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেপরিকল্পনা থেকে বিরত হলাম।
।। ইকেবানা ।।
সমানুপাতিক অপেক্ষা নিতান্তই বোকাম, না বলার মধ্যে যে প্রতীক্ষা লুকোচুরি খেলে তার ঢেউ মোহনা জুড়ে বিস্তারিত। দেখা না দেখার মাঝের ব্যবধান টুকু শুধু? ধূসর।
কিছু অজানা থাকাই ভালো। কতক রহস্য আবার কতক মায়াজাল। কবিতা হলো সূত্র, এলোমেলো শব্দের কোলাহল।
নীরব কথার মাঝে কিছু অক্ষর বোবা ভাষা। সামনে উজানের চরাচর জুড়ে কিছু অপলক শব্দ বিনিময়। গোধূলিও নতজানু অস্তরাগে।
আকাশ ইজেল, আঙ্গুল-রঙের স্ট্রোক, শূন্য থেকে শুরু করে রঙের আবেশ এখন ইকেবানা সাজিয়ে সঙ্গোপনে।
।। অভীপ্সা ।।
পরিপাটি শয্যা, প্রাণহীন
শার্শির ওপারে অন্তহীন সমুদ্র, নীরব
কোলাহল, ট্যাবলেটের মতো গিলে নিয়েছে আতঙ্ক,
নোনা হাওয়ায় ক্ষয় ধরেছে বহুতল,
জলকল্লোল আঁচড়ে পড়ছে পাথরের গায়ে
সকাতরে বোবা কান্না মিশে যায় জোয়ারের জলে-
এখন ভাটার টানের অপেক্ষায় শ্যাওলার শিরা উপশিরা!
জানলার বাইরে পায়রার দল সংসার পেতেছে, নিচিন্তে।
শব্দ নগরী হু হু ছুটেছে শূন্য রাস্তায়।
বুকের ভেতর লুকিয়ে থাকা ভিসুভিয়াস এখন জীবন্ত
গনগনে লাভার আঁচে আহুতি দিতে হয় অভীপ্সা!
তবু কণ্ঠে ভিন্ন সুর সাধনার আকুতি।
নিশ্চিন্ত পরশের আস্বাদন ফাঁকি রয়ে যায়।বাংলাদেশ জার্নাল/এএম