চাকরির আবেদন ফি নিয়ে ভাবনা
রিয়াজুল হক
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২২, ২৩:২৪
আমাদের চাকরির পরীক্ষাগুলো সাধারণত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে-
০১. এমসিকিউ
০২. লিখিত
০৩. ভাইভাধরে নিচ্ছি, একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। ৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। আবেদন ফি ৫০০ টাকা ( কিছু বিজ্ঞাপনে আবেদন ফি আরো বেশি টাকাও দেখা যায়)। যাই হোক ১০,০০০ জন চাকরি প্রার্থী ৫০০ টাকা খরচ করে আবেদন করল এবং সেই ১০,০০০ জন এমসিকিউ পরীক্ষা দিল। এমসিকিউ পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম ৩০০ জনকে লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত করা হলো। এই ৩০০ জন থেকে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ৫০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য বিবেচিত করে, সেখান থেকে ৫ জন চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেয়া হলো।
এখানে আবেদন ফি নিয়ে একটা প্রশ্ন এসে যাচ্ছে, কারণ পরীক্ষার্থীদের আর্থিক সংকট একটা বড় সমস্যা। সেই ক্ষেত্রে প্রাথমিক আবেদন করার সময় আবেদন ফি কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। সেটা ২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ সবাই ২০০ টাকা দিয়ে আবেদন করতে পারবে এবং এমসিকিউ পরীক্ষা দিবেন।
যারা এমসিকিউ পরীক্ষায় টিকবে, শুধুমাত্র তারাই লিখিত পরীক্ষার জন্য বাড়তি ফি প্রদান করবে। সেটা ২০০/৩০০ টাকা, যেটাই হোক। অর্থাৎ যারা এমসিকিউ পরীক্ষায় বাদ পড়বে, তাদের লিখিত বা তৎপরবর্তী পরীক্ষার জন্য আবেদন ফি দেয়ার দরকার হবে না। আর যদি কোন প্রতিষ্ঠান আবেদন ফি ব্যতীত কিংবা নামমাত্র আবেদন ফি নিয়ে নিয়োগের ব্যবস্থা করে, সেটা তো চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অধিক ভালো খবর।
চাকরির আবেদন করা মানেই কিন্তু চাকরি পেয়ে যাওয়া নয়। এই কারণে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখলেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা আবেদন করে থাকে। এমনও দেখা যায়, ছয় মাসে একজন চাকরি প্রার্থী ১০টা চাকরির জন্য আবেদন করেছে। গড়ে যদি ৫০০ টাকা আবেদন ফি হয়, তাহলে শুধু আবেদন করার জন্যই ৫,০০০ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এরপরেও চাকরি হবে কিনা, সামান্যতম নিশ্চয়তা নেই। কারণ বিশাল প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। এছাড়া, পরীক্ষার জন্য ঢাকায় যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়ার বিষয় রয়েছে, যেগুলোর সাথেও অনেক খরচ সংশ্লিষ্ট।
যারা চাকরির পরীক্ষা দেয়, তাদের প্রায় সবাই বেকার। আবেদন ফি'র বিষয়টি সকল নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিবেচনা করা প্রয়োজন। এটা করলে চাকরিপ্রার্থীদেরই উপকার হবে। আর চাকরিপ্রার্থীদের জন্যই তো চাকরির বিজ্ঞাপন।
লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস