ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাক্ষাৎকারে বিএনপি নেতা এমরান সালেহ প্রিন্স

‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচি নিয়ে নামবে বিএনপি

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২১, ২১:৩১  
আপডেট :
 ০৯ জুন ২০২১, ২২:১৬

‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচি নিয়ে নামবে বিএনপি

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। সরকার বিরোধী নানা আন্দোলনে অগ্রগামী একজন হিসেবেই তাকে গণ্য করে বিএনপি। দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই নেতা দলের জাতীয় কাউন্সিল, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, আন্দোলন ও নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ জার্নালের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কিরণ শেখ।

বাংলাদেশ জার্নাল: ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে নিয়ে আপনার মতামত কি?

এমরান সালেহ প্রিন্স: দেশের করোনা পরিস্থিতির কারণে যে দুর্বিষহ অবস্থা চলছে, এই দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে সকল শ্রেণির মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা ছিলো, এবারের বাজেট হবে যুগোপযোগী ও গঠনমূলক। বাজেটে মানুষের জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দেয়া হবে। আর বাজেটের যে শিরোনাম রাখা হয়েছে, তাতে মনে হয়েছিল- খুব সুন্দর বাজেট হবে। কিন্তু ভেতরে কিছু নেই। অন্তসার শূন্য। বাজেটে জনগণের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এই বাজেটে জনগণের জীবন-জীবিকা রক্ষার কোন রোডম্যাপ নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে তার পরিবারকে অনুমতি দেয়নি সরকার, বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?

এমরান সালেহ প্রিন্স: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জটিল। এই অবস্থায় তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করেছিল, বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেনো বেগম জিয়ার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। আমরা ভেবেছিলাম, মানবিক কারণে হয়তো সরকার এটা করবে। খালেদা জিয়ার পরিবারকেও কিন্তু গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়েছিল। যে কারণে তারা আবেদন করেছিল। আবেদনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীও ইতিবাচক বক্তব্যে দিয়েছিলেন। তবে হঠাৎ করেই সরকার খোঁড়া যুক্তি দিয়ে বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে নাকচ করে দেয়। আমার কাছে মনে হয়, সরকার তার সুস্থতা চায় না।

বাংলাদেশ জার্নাল: বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি কিংবা তার পরিবার কি আদালতে আবেদন করবে?

এমরান সালেহ প্রিন্স: এ বিষয়ে তার পরিবার ও বিএনপির সিনিয়র নেতারা আলাপ-আলোচনা করছেন। আশা করি, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা বেগম জিয়ার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, কবে নাগাদ কাউন্সিল কিংবা কমিটি গঠন করা হবে?

এমরান সালেহ প্রিন্স: এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আর দেশে এখন স্বাভাবিক রাজনীতি করার পরিবেশ নেই। সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোরও পরিস্থিতি নেই। আর দলকে গোছাতে হলে এক জায়গায় বসতে হবে। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও উপজেলা পর্যায়ে বসে সাংগঠনিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিগুলো করতে হবে। তারপর জাতীয় কাউন্সিলের বিষয়। কিন্তু বর্তমানে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা। এই পরিস্থিতিতে প্রায় এক বছর ধরে আমাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ, এখনো আছে। এই পরিস্থিতিতে একটা কাউন্সিল করতে যে অনুকূল পরিবেশ দরকার, সেটা নেই। তারপরও আমরা দলকে সংগঠিত ও নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য চেষ্টা করছি। আর যখনই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরবে তখন আমরা পুরোদমে সাংগঠনিক কাজ শুরু করবো। ওই সময়ই আমরা কাউন্সিলের কথা বলতে পারবো।

বাংলাদেশ জার্নাল: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থায়ী কমিটিসহ বেশ কয়েকটি শূন্য পদ রয়েছে, এ পদগুলো কি কাউন্সিলের আগেই পূরণ হবে?

এমরান সালেহ প্রিন্স: বিএনপির চেয়ারম্যানকে এই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান যখন মনে করবেন, তখন করবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: আগামী দিনে নির্বাচন কিংবা জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করবে?

এমরান সালেহ প্রিন্স: বিএনপি আন্দোলনে ছিল, আন্দোলনে আছে এবং আন্দোলন করবে। গত ১২ বছরে এই অগণতান্ত্রিক সরকার ও তাদের গণবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে বিএনপি বিভিন্ন সময় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। আর বিএনপি ইস্যুভিত্তিক এবং জাতীয় আন্দোলনও করেছে। আন্দোলন করতে গিয়ে সরকারের রোষানল ও দমন-নিপীড়নে শিকার হয়েছি। আর বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়েই তাদের দাবি আদায় করতে চায়।

বাংলাদেশ জার্নাল: আপনি বলছেন, আন্দোলন করেছেন। কিন্তু দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছে, এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

এমরান সালেহ প্রিন্স: বেগম খালেদা জিয়াকে যেদিন জেলে নেয়া হলো, সেদিন থেকেই বিএনপি আন্দোলনে আছে। সেই আন্দোলনে আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আন্দোলন কিন্তু ব্যর্থ হয়নি। সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আর আন্দোলনের কারণে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে। তবে আপনারা বলতে পারেন, আপনাদের রাজপথের আন্দোলনের কারণে নয় বরং বেগম জিয়ার পরিবারের আবেদনে তিনি মুক্ত হয়েছেন। কিন্তু সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল বলেই তার পরিবারের আবেদনে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল: দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল, আগামী নির্বাচনেও কি বিএনপি এই সরকারের অধীনে ভোটে যাবে?

এমরান সালেহ প্রিন্স: ২০১৮ সালের নির্বাচন আর ভবিষ্যৎ নির্বাচন কিন্তু এক নয়। এই সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা যাবো না। যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। কারণ এই সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সরকারকে বলবো, আগামী নির্বাচনকে ২০১৮ সালের নির্বাচন মনে করবেন না। আমরা ডু অর ডাই, সেই প্রক্রিয়া নিয়ে নামবো। হয় আমরা বাঁচবো, না হয় গাজী হবো। আর নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচন আমরা করতে দেবো না।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত