ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

উন্নত প্রযুক্তির বজ্র প্রতিরোধক ক্রয় করবে সরকার

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৮:১৫

উন্নত প্রযুক্তির বজ্র প্রতিরোধক ক্রয় করবে সরকার

বজ্রপাত থেকে মানুষের জীবন রক্ষায় সরকার উন্নত প্রযুক্তির বজ্র প্রতিরোধক ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বুধবার আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ‘বজ্রপাত ও করণীয়’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বজ্রপাত বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক মহা আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে মৃত্যু হার বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে। এতদিন এই বজ্রপাত ছিল গ্রাম, হাওর বা বিল এলাকায়, এখন শহর এলাকায়ও দেখা যাচ্ছে। বর্তমান সরকার বজ্রপাতজনিত ক্ষয়ক্ষতি রোধে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা। মানুষ ছাড়াও গবাদি পশুপাখি মারা যাচ্ছে। বজ্রপাত থেকে রক্ষায় অন্যতম উপায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। সরকার এই বিষয়ে কাজ করছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি হিসেবে বর্তমান সরকার ১০ লক্ষ তাল গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি আরো বলেন, থাইল্যান্ডে তাল গাছ লাগিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। সেখানকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ভিয়েতনামে মোবাইল টাওয়ার এর আর্থিং সিস্টেমের মাধ্যমে বজ্রপাতে মৃত্যু সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশে হাওর এলাকায় তাল গাছ লাগানোর পাশাপাশি টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সব থেকে বেশি দরকার হলো মানুষের সচেতনতা। আমরা টেলিভিশন রেডিও পত্রিকার মাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করছি। এছাড়াও বজ্রপাত থেকে মানুষের জীবন রক্ষায় বর্তমান সরকার উন্নত প্রযুক্তির বজ্র প্রতিরোধক ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উষ্ণতা বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক রয়েছে। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে এমনিতেই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু বজ্রপাত নয় সকল ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বৃক্ষ আমাদের সুরক্ষা দেয়। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণের এবং বনায়নের উপর সর্বোচ্চ জোর দিয়েছেন। সবাইকে অনুরোধ করব আসুন বেশি বেশি করে গাছ লাগাই, সাথে কিছু তালগাছ সুপারি গাছ বা খেজুর গাছ লাগাই, বজ্রপাত জনিত ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে চলি।

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার আগে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা যদি ১ ডিগ্রি বৃদ্ধি পায় তাহলে বজ্রপাতের সংখ্যা ৫০ ভাগ বেড়ে যায়। তাই সবার আগে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।

আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। বজ্রপাত এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ এবং পরিবেশবিদের এক সাথে কাজ করতে হবে।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, মানবজাতি প্রকৃতির কাছে অসহায়। বাংলাদেশে সাধারণত মে থেকে জুলাই মাসে বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ অন্যতম বজ্রপাত প্রবণতা এলাকা। বজ্রপাতের সময় আলো এবং শব্দের পার্থক্য হিসেব করলে বোঝা যায় কত দূরে বজ্রপাত হচ্ছে। সে অনুযায়ী আমরা নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিতে পারি। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি জেলায় কম বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। এর মধ্যে ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, শ্রীমঙ্গল এবং সিলেট জেলায় বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। যে সব এলাকায় বজ্রপাত বেশি হয়ে থাকে সে এলাকাগুলোতে লাইটনিং এরেস্টার স্থাপন করা প্রয়োজন। তবে বজ্রপাত থেকে জীবন রক্ষায় সামগ্রিকভাবে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক। উপকমিটির সদস্য এবং আইইবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. রনক আহসানের সঞ্চালনায় অন্যরা বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ জার্নাল- এমআর/ ওআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত