ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাক্ষাৎকারে আমান উল্লাহ আমান

দলকে ঢেলে সাজিয়ে আন্দোলনে নামবে বিএনপি

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৫৬  
আপডেট :
 ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:১৫

দলকে ঢেলে সাজিয়ে আন্দোলনে নামবে বিএনপি
আমান উল্লাহ আমান

আমান উল্লাহ আমান। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন। ১৯৯০-৯১ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন আমান।

১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি সরকার গঠন করলে আমান উল্লাহ আমান ওই সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে পুনরায় তার দল সরকার গঠন করলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।

বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে সক্রিয় তিনি। ঢাকা মহানগর বিএনপি, আন্দোলন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং কমিটি গঠনসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ জার্নালের সঙ্গে কথা হয় আমান উল্লাহ আমানের। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কিরণ শেখ।

বাংলাদেশ জার্নাল: ঢাকা মহানগর বিএনপিকে নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

আমান উল্লাহ আমান: ঢাকা মহানগর থেকে শুরু করে সকল মহানগর এবং সকল রাজনৈতিক জেলায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সংগঠনগুলোর কমিটি গঠন করা চলমান প্রক্রিয়া। মেয়াদোত্তীর্ণ হলে নতুন করে কমিটি করা হয়। সেই অনুয়ায়ী সেটাই হয়েছে। আর আমার প্রথম পরিকল্পনা হচ্ছে, দলকে ঢেলে সাজানো। এর মধ্যে দিয়ে দল শক্তিশালী হলে জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পারেন, হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে তাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন- সেই লক্ষ্যে আমরা দলকে সুসংগঠিত করছি। আর একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

বাংলাদেশ জার্নাল: এক দশক ধরে রাজধানীতে নগর বিএনপির বিগত কমিটিগুলো আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছে, নতুন কমিটিও কি সেই পথে হাঁটবে?

আমান উল্লাহ আমান: গত কমিটিগুলো আন্দোলনের জন্য তারা তাদের চেষ্টা করেছেন। আপনারা দেখেছেন, কিভাবে গুলি করে হত্যা করেছে, গুম ও খুন করা হয়েছে। আন্দোলনকে দমন করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। তারপরেও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা আন্দোলনের জন্য চেষ্টা করেছেন। আমাদের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আর আমাদের নতুন এই কমিটির মধ্যে দিয়ে, ইনশাল্লাহ আমরা আশা করি- একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে জনগণ তাদের আকাঙ্খা অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন এবং পছন্দের সরকার গঠন করতে পারবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: আপনি বলছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আপনারা আন্দোলন করবেন। এজন্য কবে নাগাদ আপনারা রাজপথে নামবেন?

আমান উল্লাহ আমান: আমরা তো রাজপথে আছি। আপনারা দেখেছেন, কয়েকটি ওয়ার্ড কমিটি গঠন হয়ে গেছে। এরপর থানা, মহানগর, দেশের বিভিন্ন জেলা এবং ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হবে, এটা চলমান প্রক্রিয়া এবং চলছে। এর মধ্যে দিয়ে সরকারকে বলা হবে যে, জনগণ যাতে ভোট দিতে পারেন- এজন্য তারা যেনো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও যদি দলীয় সরকারের অধীনে হয়, সেই নির্বাচনে আপনারা বিরোধীতা করবেন, না কি একদাশ সংসদ নির্বাচনের মতো সেই ভোটেও আপনারা যাবেন?

আমান উল্লাহ আমান: জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন, ব্যালটের মাধ্যমে নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে ব্যক্ত করতে পারেন- এই দাবিগুলো পূরণের জন্য আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সুতরাং দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন মেনে নেয়া হবে না।

বাংলাদেশ জার্নাল: নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হয়েছে, কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে?

আমান উল্লাহ আমান: খুব দ্রুত। প্রথমে ওয়ার্ড কমিটি। এরপরে থানা কমিটি। আর থানা কমিটিগুলো হয়ে গেলে মহানগর কমিটি দেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল: প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে লাশ নেই, তা খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারাও ভালো করে জানেন। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

আমান উল্লাহ আমান: এটা যারা বলেছেন, তারা নিজেরাই নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করুক। সেখানে জিয়াউর রহমানের লাশ আছে কি নেই, এধরণের কথা অত্যন্ত নিকৃষ্টতম ও নিচু মনোভাব নিয়ে যারা বলতে পারেন- সেই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। তবে এধরণের মিথ্যাচারের জন্য জাতি তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।

বাংলাদেশ জার্নাল: আইনমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চাইলে জেলে গিয়ে তাকে নতুন করে আবার আবেদন করতে হবে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

আমান উল্লাহ আমান: মিথ্যা একটা মামলায়, মিথ্যাভাবে সাজা দিয়ে আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছে। এখন তিনি অসুস্থ। সবাই জানেন। তাই চিকিৎসার জন্য তার পরিবার থেকে বলা হয়েছে। তারপরেও তারা যে গড়িমসি করছেন। কারণ তারা চাচ্ছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বিনা চিকিৎসায় থাকুক। আর এর পরিণতি কি হবে, সেটা চিন্তা করেই তারা এটা করছেন। সুতরাং আবার জেলে গিয়ে নতুন করে আবেদন করার কোন বিষয় না। কারণ উনি যেকোন সময় জামিন পেতে পারেন। কারণ অতীতেও এভাবে জামিন পেয়েছে এবং পাচ্ছেও। এটা সরকারের নীল নকশার অংশ এবং তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল: মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই কেন্দ্রীয় বিএনপি চলছে। কবে নাগাদ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

আমান উল্লাহ আমান: নিয়ম-কানুন মেনেই আমরা দল পরিচালনা করছি। করোনার জন্য সারাদেশ স্থবির ছিলো এবং এখনও আছে। এর বাইরে কথা বলা যাচ্ছে, কথা বললেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। কাউকে এক জায়গায় বসতে দিচ্ছে না। সেখানে কিভাবে কাউন্সিল হবে? তারপরও আমরা আশাবাদী সময় মতো কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত