গুমের আলামত ধ্বংসের অশুভ চক্রান্ত করছে সরকার

সরকার গুমের সাক্ষ্য, প্রমাণ এবং আলামত ধ্বংসের বেআইনী এবং ন্যায়বিচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অশুভ চক্রান্তের পথে হাঁটা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যারলয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

দেশকে মগের মুল্লুক বানিয়েছে আওয়ামী লীগ: ফখরুল

তিনি বলেন, সম্প্রতি মানবাধিকার লংঘনে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বর্তমান পুলিশ এবং র‍্যাব প্রধানসহ সাতজন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভিসা বাতিল এবং র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অবৈধ দখলদার সরকার দিশেহারা হয়ে তাদের দ্বারা সংঘঠিত গুমের মত মানবতাবিরোধী অপরাধের সাক্ষ্য, প্রমাণ এবং আলামত ধ্বংসের বেআইনী এবং ন্যায়বিচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অশুভ চক্রান্তের পথে হাঁটা শুরু করেছে।

‘বিএনপির নিকট এই মর্মে সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত আছে যে, গত ১০ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ১১টার সময় ২০১৩ সালে গুমের শিকার রাজধানীর সবুজবাগ থানা ছাত্রদলের সভাপতি মাহবুব হাসান সুজনের (সুজন) পিতা আব্দুল জলিল খানের (১৪৯/৪, আহম্মদবাগ, বাসাবো-ঠিকানার) বাড়িতে সবুজবাগ থানার এসআই রবীন্দ্রনাথ সরকার রবীনের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের একটি টিম যায়। সেখানে সুজনের পিতাকে দিয়ে পুলিশের হাতে লেখা একটি বক্তব্যে স্বাক্ষর দিতে চাপ প্রয়োগ করে, যেখানে লেখা ছিলো সুজন স্বেচ্ছায় বাড়ী থেকে চলে গিয়ে নিখোঁজ হয়।’

রিজভী বলেন, সুজনের পিতা উক্ত ফরমায়েশি বক্তব্যে স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করলে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ফোনের মাধ্যমে অবগত হলে তার হস্তক্ষেপে পুলিশ ফিরে যায়।

‘বিএনপি আরও অবগত আছে যে, একই প্রক্রিয়ায় পুলিশ এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুমের শিকার সাজেদুল ইসলাম সুমনসহ অন্য পরিবারের সদস্যদের নিকট থেকেও একই রকম ফরমায়েশি বক্তব্য আদায়ের চেষ্টা করেছে। গুমের সাক্ষ্য এবং আলামত ধ্বংসের এ ধরনের বেআইনী পদক্ষেপ অবৈধ সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা শুধু প্রতিষ্ঠিতই করছে না। এই পদক্ষেপগুলো এই অবৈধ সরকারকে নিত্য নতুন অপরাধেও সম্পৃক্ত করছে।’

বিএনপি বর্তমান অবৈধ ক্ষমতা দখলদার, ফ্যাসিস্ট, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত অবৈধ সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ চায় দাবি করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার চায়। সব খুন ও গুমসহ মানবাধিকার লংঘনের বিচারের পথকে সুনিশ্চিত করতে চায়। তবে সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধ গুম-খুনের ঘটনা যতই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করুক, তাতে কোন লাভ হবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নিকট গত ১৩ বছর ধরে গুম-খুনসহ বিচারবহির্ভূত হত্যার হিসাব প্রমাণসহ তাদের নিকট রয়েছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করে পুলিশ দিয়ে মিথ্যা স্টেটমেন্ট তৈরী করে শেষ রক্ষা হবে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এমএস