ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তাদের অর্থ পাচার নিয়ে কথা বলার অধিকার নাই

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২২, ১৭:৪৭

পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তাদের অর্থ পাচার নিয়ে কথা বলার অধিকার নাই
ছবি: প্রতিনিধি

যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার ভাই অর্থ পাচারের দায়ে আদালতে দন্ডিত। যাদের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করেছেন।যাদের আমলে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়, তাদের অর্থ পাচার নিয়ে কথা বলার অধিকার নাই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অর্থ পাচারের বিষয়ে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দেয়, তার ভাইয়ের অর্থ পাচার সিঙ্গাপুরে উদঘাটিত হয় এবং সেই অর্থ ফেরত আনা হয় তারা তো দুর্নীতিতে বিশ্বচোর।

সোমবার দুপুরে রাজধানী শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক ১৭ই মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রে উত্তোলন এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির কারা অর্থ পাচার করেছে তাদের কথা আস্তে আস্তে বের হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা এই ধরণের অর্থ পাচার করেছে আমরা সেগুলো উদঘাটন করছি, তাদেরকে আইনের আওতায় আনছি এবং সেই কারণেই পিকে হালদার ধরা পড়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং তার ভাই ছাড়াও আরো কারা অর্থ পাচার করেছে আমাদের জানা আছে, আস্তে আস্তে সেগুলোও আপনারা জানতে পারবেন। আমরা সেগুলো উদঘাটন করছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন এবং এটি অব্যাহত থাকবে।

সরকারকে শ্রীলংকার উদাহরণ দেয়াকে বিএনপির অনর্থক অপপ্রচার বলে বর্ণনা করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, শ্রীলংকার উদাহরণ বাংলাদেশকে দিয়ে লাভ নেই। যে দেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে, যে দেশ শ্রীলংকাকে দুইশ’ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয় এবং ফেরত দিতে না পারছে না বিধায় ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আমরা বাড়িয়ে দিয়েছি, সেই দেশ, সেই সরকারকে এই উদাহরণ দেয়া অনর্থক এবং অপপ্রচার।

মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের কথা বলে বিএনপি সারাদেশে সমাবেশের নামে নিজেরাই মারামারি করে। আমরা এখনো মাঠে নামি নাই, যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হয়, আমরা মাঠে নামবো। যারা উঁচু গলায় বক্তৃতা করেন, কি হলে, কি করলে তারা গর্তে লুকাবেন সেটা আমরা ভালো করেই জানি।

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিলো না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা যার ধমনিতে শিরায় বঙ্গবন্ধু রক্ত প্রবাহমান, যার কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ প্রতিধ্বনি হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের অগ্নিবীণা, অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠকণ্ঠের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হয়েছিলো। গত ৪১ বছরে পথ চলায় সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের পাশে থেকেছেন এবং আছেন। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র বাক্সবন্দি থেকে মুক্ত হয়েছে। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এসেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে।

আলোচনা সভায় সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ১৯৮১ সালের এই দিনে ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে স্বদেশে ফিরে আসেন তিনি।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ ছিল পাকিস্তানের আদলে নামেই শুধু বাংলাদেশ। তিনি দেশে ফিরে না এলে অনেক আগেই বাংলাদেশ পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো।বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসছেন বলেই বাংলাদেশ এখন সমৃদ্ধির পথে।

প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তীকালে ক্ষমতাসীনরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর এমন নির্যাতন করা হয়েছিল। ভুয়া মামলা দিয়ে জেলে ঢুকানো হয়। যখন ক্ষমতাদখলকারীরা দেখলো যে আওয়ামী লীগ নেতা নির্ভর দল নয়, কর্মী নির্ভর দল, প্রতিবাদের জোয়ার তৈরি হচ্ছে; তখন তাদের ওপর সামরিক বাহিনী নামিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগ কর্মীদের অস্ত্র মামলা দেয়া হলো। এভাবে প্রচুর আওয়ামী লীগের কর্মীকে, তৃণমুলের কর্মীদের পর্যন্ত জেলে দেয়া হয়েছিল।আওয়ামী লীগের ওপর এমন নিপীড়ন আনা হলো যে তারা দল থেকে বেরিয়ে অন্য দল করলো। আওয়ামী লীগ ব্রাকেটবন্দি হয়ে গেলো। এতে সারাদেশের কর্মীরা খুব হতাশ হয়ে গেলেন। কে এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে? শেখ হাসিনা আসার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

আলোচনা সভায় বাংলা একাডেমির সভাপতি ও কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের কাছে একটি প্রস্ফুটিক ফুল। তিনি দেশে এসে আমাদের জাতি সত্তাকে আলোকিত করেছেন, নিজের সৌরভ, চেতনা ও জ্ঞান দিয়ে আলোকিত করেছেন। ৮১ সালে তিনি দেশে বাংলাদেশের মানুষকে আলোকিত করেছেন এটা আমাদের গৌরব।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বন ও পরিবেশ উপ কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক উপ কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবেসের আলোচনা সভায় সুচনা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ।এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এআর/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত