ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪১ মিনিট আগে
শিরোনাম

আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি জামায়াতের

  আকরাম হোসেন

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:১২  
আপডেট :
 ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৪২

আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি জামায়াতের
ফাইল ফটো

ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে তৎপর রাজনৈতিক অঙ্গন। লক্ষ্যে পৌঁছাতে নানা কৌশল আঁটছে দলগুলো। বসে নেয় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশও। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। পাশাপাশি নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে তারা।

এদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন যাবে না জামায়াত। আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে আন্দোলনের মাধ্যমে বাধ্য করা হবে। এক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে একাট্টা জামায়াত। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই নির্বাচন চায় দলটি।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, অতীতে কোন দলের কী ভূমিকা ছিল, এটা পর্যালোচনা করি না। বর্তমান দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রামে নেমে পড়ব, এটাই আমাদের অঙ্গীকার। দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য আরও সুদৃঢ় করতে হবে। যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে। সম্মিলিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাব।

সম্প্রতি জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়েছে। নিয়মিত কর্মিসভা করছে। গত শনিবার পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় রোকন সম্মেলন করে দলটি। সেখানে জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ঝুঁকি গ্রহণ করতে হবে বলে নেতাকর্মীদের জানান জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। কর্মিসভার পাশাপাশি সামাজিক কাজে নিজেদের সম্পৃক্তা বৃদ্ধি করছে তারা।

গত শুক্রবার সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে মৃত পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জামায়াত। মৃত নয়টি পরিবার ও আহত ছয়টি পরিবারসহ মোট ১৫ কৃষক পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। বিভিন্ন জেলায় জামায়াতের আমীরদের নেতৃত্বে এরই মধ্যে মনোনয়ন বাছাই কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে জামায়াতের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এটা জামায়াতের স্বাভাবিক কার্যক্রম। জামায়াত সব সময় তৎপর একটি সংগঠন। এখানে দাওয়াতি কাজ আছে, সাংগঠনিক কাজ আছে, কর্মিসভা আছে, রোকন সভা আছে। এগুলো নিয়মিত হচ্ছে, সব সময় হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা হলে জামায়াত অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে বলে জানান এই নেতা।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন হওয়া দরকার। কিন্তু সেই নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং সব ভোটারদের অংশগ্রহণে। সবাই যাতে ভোট প্রয়োগ করতে পারে সে ধরনের পরিবেশ চায় জামায়াত। ২০১৪ ও ১৮ সালে গোটা জাতির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। এর থেকে যদি বের হয়ে আসতে হয়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারপর নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। জামায়াত মনে করে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতীতে কোনো সরকারই তো তার স্বার্থের বাইরে যেতে চায়নি। কিন্তু এক পর্যায়ে গেছে। এমনই হবে। জনগণের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার মেনে নেবে।

সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ঐকমত্য রয়েছে। জামায়াতের প্রসঙ্গে এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি এখন। এটা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। সব দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করবে। এটাই হচ্ছে আমাদের কথা।

বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্যে জামায়াতের সম্মতি রয়েছে। এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে মতিউর রহমান আকন্দের বক্তব্যের। তিনি বলেন, আমাদের আমির ড. শফিকুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন একটা কমন দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত অংশগ্রহণ করবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। নিবন্ধন না থাকায় দলীয় পরিচয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না জামায়াত। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে করতে হবে। অথবা কোনো নিবন্ধিত দলের জোটসঙ্গী হয়ে জামায়াতকে নির্বাচন করতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত