ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাজশাহীতে ৩ ঘণ্টার অনুমতিতে বিএনপির ‘তিন দিনের সমাবেশ’

  আকরাম হোসেন, রাজশাহী থেকে

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:২০  
আপডেট :
 ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:৪২

রাজশাহীতে ৩ ঘণ্টার অনুমতিতে বিএনপির ‘তিন দিনের সমাবেশ’
রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ। ছবি: নিজস্ব

রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ করার জন্য প্রসাশন থেকে তিন ঘণ্টার অনুমতি পেয়েছিলো বিএনপি। এই তিন ঘণ্টার অনুমতিতে 'তিন দিনের সমাবেশ' করেছে দলটি। অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মত রাজশাহীতেও বাধা টপকিয়ে সফল সমাবেশ করেছে। রাজশাহীর সমাবেশ শেষ করে ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটির নেতাকর্মী।

শনিবার নগরীর হাজী মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে (মাদ্রাসা মাঠ) হয় বিএনপির সমাবেশ। আট সর্তে তিনি ঘণ্টার জন্য সমাবেশ করার অনুমিতি দেয় প্রসাশন।

এ দিকে বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটেন ডাক দেন পরিবহন মালিক সমিতি। পরিবহন ধর্মঘট ও নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতা এড়াতে মঙ্গলবার থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মী এসে জড়ো হয় রাজশাহীতে। সমাবেশস্থলে প্রবেশের অনুমিতি না থাকায় পাশের ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নেন নেতাকর্মী। মঙ্গলবার থেকে নেতাকর্মী আসলেও বুধবার নেতাকর্মীদের ঢল নামে। এদিন থেকেই অঘোষিত সমাবেশ চলতে থাকে রাজশাহীতে।

টানা তিনদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের দখলে থাকে রাজশাহী নগরী। ব্যানার ফ্যাস্টুনে ছেয়ে যায় চারপাশ। রাস্তা আর গলিতে গলিতে চলে মিছিল, স্লোগান। নেতাকর্মীদের হাতে দেখা যায় প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ধানের শীষ। অনেকে রঙিন গেঞ্জি ও ক্যাপ পড়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা নিয়ে শোভাযাত্রা করে দেখা যায়।

সমাবেশ আসতে বাঁধা সম্মুখীন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সমাবেশে যোগ দিতে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়ন থেকে বুধবার রাজশাহী আসেন হারুন উর রশিদ।

তিনি বাংলাদেশে জার্নালকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এজন্য বুধবার রাতে আমরা রাজশাহী চলে এসেছি। এখান থেকে সরাসরি ঢাকায় চলে যাবো। সেখানে বিএনপির সমাবেশ শেষ করে বাড়ি ফিরবো।

তিনি বলেন, আসার পথে কয়েকজায়গায় আমাদেন বাঁধে দিয়েছে। আমাদের গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়া হয়েছে। পুটিয়া নামকস্থানে আমাদের উপর হামলা করে খাবার কেড়ে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের লোকজন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আবারো বলছি- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় এ দেশে কেনো নির্বাচন হবে না। ‘ওবায়দুল কাদের বলেন’ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যেখানে বার বার কাটাছেঁড়া করা হয়েছে নিজের প্রয়োজনে। সেই সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলতে পারে না।

কয়েকদিন ধরে রাজশাহীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণের টাকায় আপনাদের বেতন হয়, ভাতা হয়, গাড়িতে চড়েন, বাড়ি বানান। এই নিরীহ মানুষগুলোর ওপর নির্যাতন চালাবেন না। এই দেশের মানুষ কোনোদিন অন্যায় সহ্য করেনি, আর করবেও না। পরিষ্কার করে বলছি আপনারা আমাদের প্রতিপক্ষ নন। আপনারা রাষ্ট্রের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক। আমরা রাষ্ট্রের মালিক, আপনারা নন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারী,সেবক, আপনাকে জনগণের পক্ষে থাকতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, নেতাকর্মী তিন দিন, তিন রাত কষ্ট করেছে। খোলা মাঠে, বালির মধ্যে ঘুমিয়েছে। তাদের তাবু ভেঙে দেয়া হয়েছে, চুলার আগুনে পানি দেয়া হয়েছে। তারপরও তাদের ঠেকানো যায় নাই। চিড়া-মুড়ি খেয়ে, খিচুড়ি খেয়ে, না খেয়ে এই সমাবেশ সফল করেছে। আসলে জনগণের যখন জোয়ার উঠে, তখন কেউ ঠেকাতে পারে না। কোনোভাবেই ঠেকানো যায় না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবার হাসান মাহামুদ টুকু বলেন, আপনারা অনেক বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এই সমাবেশে এসেছেন। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র ফিরে আসলে গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবে। গণতন্ত্র ফেরত আসলে আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশে ফেরত আসবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির হোসেন, মো. মিজানুর রহমান মিনু, মাহবুবুর রহমান, মো. শাহজাহান মিয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এম এ লতিফ খান, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত