ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ইতিহাস গড়লো ক্রোয়েশিয়া

  ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:১৮  
আপডেট :
 ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৫৬

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ইতিহাস গড়লো ক্রোয়েশিয়া
ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ইতিহাস গড়লো ক্রোয়েশিয়া । ছবি: ইন্টারনেট

কাতারে বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ট্রাইবেকারে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০০২ সালের ফাইনালে জার্মানিকে পরাজিত করার পর থেকে নকআউট ম্যাচে ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে ব্রাজিল কখনো জিততে পারিনি।

কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচ দীর্ঘ দিন মনে থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের। বিশ্বকাপের স্মরণীয় ম্যাচগুলির মধ্যে এডুকেশন সিটিতে সদ্য সমাপ্ত হওয়া এই ম্যাচটি নিশ্চিত ভাবে জায়গা করে নিল। ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ক্রোয়েশিয়া। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ক্রোয়েশিয়া পরাজিত করল ব্রাজিলকে।

নির্ধারিত সময়ে কোনও গোল হয়নি দু’দল। অতিরিক্ত সময়ে ব্রাজিলের নেইমার গোল করলেও শেষ দিকে সমতা ফেরান ব্রুনো পেটকোভিচ। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডোমিনিক লিভাকোভিচ বাঁচিয়ে দেন রদ্রিগোর শট। চতুর্থ শটে মার্কুইনোস পোস্টে মারেন। ক্রোয়েশিয়া চারটিতেই গোল করেছে।

ফেভারিট হিসেবেই এই দিন কোয়ার্টর ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। ধারে এবং ভারে ক্রোয়েশিয়ার থেকে এগিয়ে থাকা ব্রাজিল গোটা ম্যাচে প্রত্যাশিত মতোই আক্রমণ চালায়। কিন্তু নেইমার-রিচারলিসনদের গোল মিসের বহরে কাঙ্খিত গোলের দেখা পুরো ৯০ মিনিটের খেলায় পায়নি ব্রাজিল।

শুধু ব্রাজিলের ফুটবলারদের ব্যর্থতার কথা বললে হয়তো সঠিক বিশ্লেষণ করা হবে না এই ম্যাচের। অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে সীমিত ক্ষমতার মধ্যে ক্রোয়েশিয়ার বুক চিতিয়ে লড়াই এবং হিমালয়সম হয়ে ওঠা ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিটের কথা।

প্রথম থেকে ব্রাজিলকে চাপে রাখার চেষ্টা করতে থাকে ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলকে খেলার জন্য একটুও খোলা জায়গা দিচ্ছিল না তারা। বলের নিয়ন্ত্রণ বেশি ছিল ক্রোয়েশিয়ার পায়ে। মূলত প্রতি আক্রমণে গোলের চেষ্টা করছিল ক্রোয়েশিয়া। ১৩ মিনিটের মাথায় ডান দিক থেকে ক্রস করেছিলেন মদ্রিচ। কিন্তু সেই ক্রসে পা ঠেকাতে পারেননি পেরিসিচ।

ম্যাচের ২২ মিনিটে পর পর দু’টি আক্রমণ করে ব্রাজিল। প্রথমে ভিনিসিয়াস, তার পর নেমার। কিন্তু দু’টি প্রয়াসই ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ আটকে দেয়। ক্রোয়েশিয়াকে বেশি মনোযোগ দিতে দেখা যায় নেমারকে আটকানোর দিকে। তাকে ফাউল করা হতে থাকে বার বার। বাঁ দিকে ভিনিসিয়াসও গোলের মুখ খুলতে পারেননি।

৪২ মিনিটের মাথায় ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রিকিক করা হয়। নেমারের পাস বিপক্ষ ফুটবলারের গায়ে লেগে হালকা ঘুরে গেলেও জমা পড়ে গোলকিপারের হাতে। বিরতিতে আর কোনও গোল হয়নি।

বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। ম্যাচ শুরু হওয়ার দু’মিনিট পরেই জোড়া আক্রমণ বাঁচিয়ে দেয় ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভাগ। নেমারের শট গাভারদিয়লের পায়ে লেগে নিজের গোলেই ঢুকে যাচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে বাঁচান ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার লিভাকোভিচ। তার পরে ক্রোয়েশিয়ার এক ফুটবলারের হাতে বল লাগলেও রেফারি ভিআরের সঙ্গে পরামর্শ করে পেনাল্টি না দেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেন।

৫৭ মিনিটে রাফিনহাকে তুলে অ্যান্টনিকে নামান তিতে। ডান দিক থেকে আক্রমণ বাড়াতে চাইছিলেন তিনি। নেমেই ডান দিকে পাস বাড়িয়েছিলেন অ্যান্টনি। অল্পের জন্য গোল হয়নি। ম্যাচের ৮০ মিনিটের মাথায় অ্যান্টনির ক্রস পেয়েছিলেন রদ্রিগো। তার থেকে পাস পেয়েছিলেন পাকুয়েতা। তার শট আবার আটকে দেন সেই লিভাকোভিচ।

অতিরিক্ত সময়ের শুরু থেকেই গোল করার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে ব্রাজিল। কিছুতেই একটাও আক্রমণ দানা বাঁধছিল না। বার বার ক্রোয়েশিয়ার বক্সে গিয়ে প্রতিহত হচ্ছিল তাদের আক্রমণ। এর মাঝেই দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। বক্সের মধ্যে ভাল বল পেলেও বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন ব্রোজোভিচ। সহজ সুযোগ নষ্ট করে ক্রোয়েশিয়া।

অপেক্ষার মুহূর্ত শেষ হয় ১০৫ মিনিট। নেইমারের অসাধারণ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। মাঝমাঠ থেকে মুভ শুরু করেছিলেন নেমারই। প্রথমে পাস খেলেন পেদ্রোর সঙ্গে। সেখান থেকে নেমার বল পেয়ে দেন পাকুয়েতাকে। পাকুয়েতার থেকে পাস পেয়ে গোলকিপার লিভাকোভিচকে এক টোকায় কাটিয়ে বল জালে জড়ান নেমার।

ব্রাজিল ভেবেছিল তারা সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছে। মুহূর্তের অসাবধানতায় গোল খেয়ে বসে তারা। ১১৭ মিনিটের মাথায় প্রতি আক্রমণে আসে ক্রোয়েশিয়া। সেখান থেকে পেরিসিচের পাসে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন ব্রুনো পেটকোভিচ।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত